কেউ যদি জিজ্ঞেস করে যে মোমিনপুর কি মেদিনীপুরের কাছেই অথবা কেউ যদি জবাব দেয় যে সিঙ্গাপুর সিঙ্গুরের পাশেই, তাহলেই মানুষ তাকে নিয়ে মশকরা করে মজা করবেন। তামাশা করবেন পরিবেশ আর জগৎ সম্পর্কে তার অজ্ঞতা নিয়ে। এতে কিন্তু তার সেই অজ্ঞতা দূর হবে না। বরং এমন ঠাট্টা- তামাশা আর মজা করার জন্যই তার সাথে সকলের দূরত্বই বাড়বে। কেউ যদি মানচিত্র নিয়ে এসে তার অজ্ঞতাকে দরদ দিয়ে অনুভব করে, তারই নিজস্ব অনুভবের মাটিতে দাঁড়িয়েই, দুটি জায়গার দূরত্ব আর অস্তিত্ব সম্পর্কে ভালোভাবে দেখিয়ে, জানিয়ে, বুঝিয়ে দেন, তাহলেই সম্ভবত তার সেই অন্ধকার দূর হতে পারে। 'ঠাকুর' সম্পর্কেও আমাদের দেশে ঠিক এই রকমই একটা চলিত সংস্কারের ধারণা আছে। নিজস্ব মনগড়া অথবা চলিত সেই সংস্কারের ধারণা থেকেই ঠাকুরপূজা হয়ে আসছে অথবা দুঃখে বা দারিদ্র্যের দুঃসহ দুরন্ত যন্ত্রণারই আমরা ঠাকুরকে ডেকে থাকি। সেই ডাক যখন সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারে না, তখনই ব্যর্থতা বা হতাশায় আচ্ছন্ন হই। আর ঠাকুরও ক্রমশই অর্থহীন হয়ে যায় কিংবা সারা দিনই খুব 'ঠাকুর' 'ঠাকুর' করে বেড়াই। অথচ আচরণ ও জীবনে সেই ঠাকুরত্বের প্রকাশ হয় না। ফলে, পরিবেশ ঠাকুর সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ বা বিরাগভাজন হয়ে থাকে। পরিবেশের সেই নিরুৎসাহ ভাব আবার ভেতরে-ভেতরে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে আমাকে পরিবেশের প্রতিও অসূয়াপ্রবণ করে যেমন, ঠিক তেমনি ঠাকুরত্ব সম্পর্কেও সংশয় নিয়ে আসতে থাকে ধীরে ধীরে। 'এই তো সারা জীবন ঠাকুর ঠাকুর করলাম!