পাহাড়, নদী, বন-বনানী আচ্ছাদিত অপরূপ শ্যামল-শোভামন্ডিত জনপদ রাঙ্গামাটিতে আমার জন্ম, বেড়ে উঠা,ডিগ্রী ক্লাস পর্যন্ত অধ্যয়ন, পরবর্তীতে কিয়ৎকাল আরেক শ্যামল বাগিচাঘেরা বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যা অর্জনের জন্য বেশ কিছু দিন অবস্থান। পরবর্তীতে সরকারী চাকুরী উপলক্ষে জীবনের সিংহভাগই কেটেছে আমার মাতৃভূমির সুন্দর ও বৈচিত্রময় বিবিধ জনপদে। বেশ কিছুটা সময় কেটেছে সমতলের বিভিন্ন অঞ্চলেও। কর্মস্থলের পারিপার্শ্বিক রূপ-সুষমা,নানা চিন্তা-চেতনার হাজারো মানুষের সংস্পর্শে থেকে আমি তিলে তিলে সঞ্চয় করার চেষ্টা করে গেছি আমার লেখার উপজীব্য। প্রকৃতি যেমন আমাকে তার দিকে আকর্ষণ করে গেছে আজীবন,আমার চারিপাশে বিচরণকারী আমার মতো মানুষগুলোর কর্মকান্ড,তাঁদের বেঁচে থাকার নানা কসরতও-আমার হৃদয়কে দোলা দিয়ে গেছে বার বার। আমি এই মানুষগুলোর চোখে চোখ রেখে বুঝতে চেষ্টা করেছি তাদের অন্তরের না বলা কথাগুলো। আমি তাদের হৃদয়ে কান পেতে শুনার চেষ্টা করে গেছি মানুষগুলোর প্রাপ্তি আর বঞ্চনার মধুর-করুণ ইতিহাস। আমি তাদের শরীরি ভাষা পড়ার চেষ্টা করে অনুধাবন করতে সচেষ্ট থেকেছি তাদের পূর্বাপর জীবনকাহিনী। আমি তাদের বিচিত্র কথাবলার ভঙ্গি, উৎপ্রেক্ষা, রসবোধ আত্মস্থ করতে উন্মুখ থেকেছি যতদূর সম্ভব। পাথেয়স্বরূপ প্রাপ্ত এই অনুভূতিগুলোকে আমি আমার কলম দিয়ে বের করে আনার চেষ্টা করে গেছি। জানি না কতটুকু সফল হতে পেরেছি-ভালো-মন্দ বিবেচনার ভার সম্মানিত পাঠকের হাতেই ছেড়ে দিলাম।
মনির আহমদ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার রাঙ্গামাটি সদরে ২৬শে জুলাই ১৯৫৩ইং সনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষের বাসভূমি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার (বর্তমানে কর্ণফুলী উপজেলা) বড়উঠান ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামে । ত্রিশের দশকের প্রথম দিকে তাঁর পিতা প্রয়াত জনাব বদিয়র রহমান রাঙ্গামাটি বন বিভাগের অধীনে চাকুরী জীবন আরম্ভ করেন এবং রাঙ্গামাটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি চাকুরী পরিত্যাগ করে হোটেল রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর মাতার নাম কদবানু। মনির আহমদ এর মাতামহও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকা থেকে উনিশ শতকের প্রারম্ভে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় আগমন করে বসবাস শুরু করেন । মনির আহমদ স্নাতকোত্তর প্রথম পর্ব পর্যন্ত লেখাপড়া করে খাদ্য বিভাগে চাকুরী জীবন শুরু করেন এবং ২০১০ইং সনে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসাবে রাঙ্গামাটি জেলাধীন কাউখালী উপজেলা থেকে অবসরে যান । বর্তমানে তিনি নিজের ছাদ বাগান এবং লেখালেখিতে মগ্ন আছেন। তাঁর দুই মেয়ে এবং দুই ছেলে। দুই মেয়ে বিবাহিত। দুই ছেলে এখনও অধ্যয়নরত।