কৈশোরের পাদঢীকা পেরিয়েও কেউ কেউ নির্মল রয়ে যেতে পেরেছেন, সজীব আছেন। সবুজাভ সেই দীপ্তি আর স্বর্ণাল দিব্যজ্ঞানের মিশ্রণে এক অনন্য ও অপূর্ব আনন্দপাঠ ‘গণকপাখি’। শিক্ষক, সাংবাদিক, কবি ও শিশুসাহিত্যিক রণজিৎ মোদক ছোটদের গল্পে জাদুকরী গুণাবলির রচয়িতা। শিশুকিশোর উপযোগী ছোটগল্প লিখে লিখে তিনি আশ্চর্য্য মধুর ভুবন সাজিয়ে চলছেন। তাঁর রচনাশৈলী নিজস্বতায় ওজস্বী, শিল্পগুণ ঋদ্ধ। চমৎকার এই বইটিতে মোট পনেরটি গল্প লিপিবদ্ধ হয়েছে। বর্ণনার সরল-সাবলীলতা, অর্থের চৈতন্য, লেখনীর উদ্দেশ্য বোধগম্য-ঝরঝরে, সার্বজনীন। রণজিৎ মোদকের ‘গণক পাখি’ পড়ে বিশ্ব ক্ল্যাসিক সাহিত্যের অন্যতম কিংবদন্তী হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসন অথবা ইশপের কথা মনে পড়ে যায়। আবার রূপকথা বাংলা এবং বিশ্বের সব ভাষাতেই কিশোরসাহিত্যের শক্তিমান অধ্যায়। কখনও নীতিকথার ঢংয়ে কখনও রূপকথার আদলে রণজিৎ মোদক লিখেছেন প্রেরণার গল্পগাথা। ফুল-প্রকৃতি, পাখি-প্রাণীকূল, চাঁদ-ফ্যান্টাসি ছাড়াও গল্পগুলির উপলক্ষ্য হয়েছে মিথ, পুরাণ ও নানাবিধ ঘটনা প্রবাহ। মুক্তিযুদ্ধ-দেশপ্রেম রয়েছে স্বমহিমায়। নি:সন্দেহে ছোটদের মনে অভিজ্ঞান ও আলোর বিকিরণ ছড়াবে বইটি।
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৫৫ সালের ৪ জুলাই জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার নাম মধুসূধন মোদক মাতা বিরাজ মোহিনী মোদক। তিনি ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ উপজেলার পারজোয়ার ব্রাহ্মণগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ ৩৮ বছর একজন সুনামর্জিত শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন। ফতুল্লা উপজেলার সদরে বর্তমান তিনি স্থায়ী আবাস গড়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সাংবাদিকতার সাথে জড়িত। বর্তমানে ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি পদে নিয়োজিত আছেন। তার লেখা অসংখ্য কবিতা, ছড়া, গল্প, প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে ধরাবাহিকতায় নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে। তিনি একজন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ 'জোছনা ভাঙ্গা ঢেউ' ও ইতিহাস ভিত্তিক 'পাগলার পাগলনাথ' বইটি পাঠক প্রিয়তা অর্জণ করেছেন।