কিছুদৃশ্যঃ • আমি দেখলাম শ্বেতপত্র বের হল তার ফোন বুথ হতে। একটু সময় দিলাম দেয়ালের পাশে হতে সরে যেতে। আমি বেরুলাম তার দৃষ্টি হতে নিজেকে আড়ালে রেখে। বাইরের রাস্তার আলোতে দেখলাম লোকটাকে। মনে হলো তাকে চিনেছি। একটা বড় গাছের কাণ্ডের পেছনে এসে দ্রুত এগিয়ে গেলাম আরো কাছে। হঠাৎ একটা দমকা বাতাস ঝাপটা দিয়ে বইলো। হ্যাটটা তার মাথা হতে উড়ে গেলো। আলোতে দেখলাম আমি আমার বসকে। গাছের পেছনে আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ। বিস্ময়ে এবং অতি গোপন তথ্য আবিষ্কারের আনন্দে। • ছেরু মিয়া অন্ধকারে আস্তে করে আমার হাত ধরল। আঁধারে তার মুখ দেখা গেলো না। ফিস ফিস করে বলল, “ওরা আমাদের লোক না।” আমি কিছু বললাম না উত্তরে। সার্চ লাইটের নীচে আলো অন্ধকারে দেখা গেল কয়েকটা কালো ছায়া। ওরা আসছে। ছৈয়ের ওপর হতে একটা ব্যাগ বের করল ছেরু মিয়া। মনে হল একটা চটের থলে। অন্ধকারে ভাল করে দেখা গেলো না। পেছনে ফিরে গাড়ীর অন্ধকারে বসে পড়লাম আমি। হাতে উঠে এসেছে স্টেনগান। “সরে যান, সাহেব। সরে যান তাড়াতাড়ি।” ফিস ফিস করে বলল ছেরু মিয়া। ওর চোখে একটা জ্বলন্ত আভা। ব্যাগের ভেতর হতে কি জানি বের করল ছেরু মিয়া। অন্ধকারে দেখা গেলো না। চাকার গায়ে বাড়ি দিয়ে কি যেন ভাঙ্গল। এসিডের তীব্র গন্ধ পেলাম। টাইম পেন্সিলের এসিড ফিউজ নিশ্চয়ই। “সরে যান, সাহেব। সরে যান তাড়াতাড়ি।” আবার ফিস ফিস করে বলল ছেরু মিয়া। দেখলাম চাকার নীচ হতে সে বের হয়ে আসছে। আমি তার হাত আঁকড়ে ধরলাম। “এ কি হচ্ছে?” “ইদ্রিস সায়েব বলেছেন বেহাত হতে গেলে বাক্সগুলো উড়িয়ে দিতে।” “আমার কাছে এমন কোন নির্দেশ নেই।” বলে এক ঝটকায় ছেরু মিয়াকে একপাশে ফেলে দিলাম আমি। ঝাঁপিয়ে পড়লাম চাকার পাশে রাখা ব্যাগটার ওপর। ছায়াগুলো ছুটে আসছে দ্রুত। দু’হাত দিয়ে শূন্যে তুলে ব্যাগটাকে ছুঁড়ে দিলাম সে দিকে প্রচণ্ড জোড় দিয়ে। ছায়াগুলো থেমে গেল একটু। ছেরুমিয়া সরে যাচ্ছে দ্রুত। স্টেনটাকে কুড়িয়ে নিয়ে আমিও কাদার ওপর দিয়ে হাতে পায়ে সরে যেতে লাগলাম। প্রচণ্ড শব্দে বোমাটা ফাটলো। কতকগুলা ছায়াকে লুটিয়ে পড়তে দেখলাম। বাকীরা আবার দল বেঁধে ছুটে এলো। ছেরুমিয়া দাঁত দিয়ে কি যেন কামড়ে ধরেছে। আমাকে হাত ইশারায় শুয়ে পড়তে বলল এবার। গরুর গাড়ীর ওপর গ্রেনেড ছুড়বে ছেরুমিয়া। কিন্তু আমি তা হতে দেব না। স্টেনের ট্রিগারের ওপর আমার আঙ্গুল একটুও কাঁপল না। পুরো ম্যাগাজিনটাই শেষ করলাম আমি। প্রচণ্ড শব্দে ফাটল গ্রেনেডটা। ছেরুমিয়াকে হারালাম আমি। পকেট হতে আরেকটা ম্যাগাজিন বের করে স্টেনের সাথে লাগালাম। লঞ্চের বাকী চারজন পাল্লার মধ্যে আসতেই শুয়ে শুয়ে ব্রাশ মারলাম। কর্ডাইটের গন্ধে ভরে গেল বাতাস।