সাহিত্য একদিকে যেমন মানুষের মনের খাদ্য, আবার সাহিত্যের মাধ্যমেই জগৎ, জীবন ও মানব মনের গভীরতা উপলব্ধি করা যায়। সাহিত্যের মাধ্যমে লেখকের ব্যক্তিগত জীবন দর্শন ও অনুভূতি প্রকাশ পায় যা একজন পাঠকের জীবন অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করে। আমি মূলত এই গ্রন্থের প্রাথমিক প্রুফ রিডার। গল্পগুলো প্রুফ রিডিং করতে গিয়ে আমি এমন এক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি যা আমাকে জীবন ও প্রেম সম্পর্কে নতুন করে ভাবিয়েছে। তাই যখন জানতে পারলাম গল্পগুলো বই আকারে বের হচ্ছে তখন আর নিজের অভিজ্ঞতাটুকু শেয়ার না করে পারলাম না। এই গ্রন্থের লেখক জনাব শফিকুল ইসলাম সরকার স্যার একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমার পূর্ব পরিচিত এবং শুভাকাঙ্খী। কিন্তু তাঁর লেখা গল্পগুলো পড়তে গিয়ে আমার এমন মনে হয়েছে যে, বহু বছর একজন মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা করেও তার সম্পর্কে যতটা না জানা যায় তার চেয়েও অধিক জানা যায় তাঁর লেখালেখি থেকে। লেখক এর লেখা গল্পগুলো মূলত তাঁর জীবন সংঘর্ষেরই দর্পণস¦রূপ। সেখানে প্রেম ও সংস্কারের দ্বন্দ্ব কী শৈল্পিক ভঙিমায় না আত্মপ্রকাশ করেছে। অনুভবে যেন স¦র্গীয় স্পর্শ। ত্যাগে দেবত্বের মহিমা। আর মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগ্রামী জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো যখন একজন মুক্তিযোদ্ধার কলমের কালিতে ফুটে ওঠে তখন বোঝা যায় এর ইতিহাস ও ঐতিহ্য আরো গভীর, আরো রোমাঞ্চকর। সর্বোপরি লেখক এর সংঘর্ষময় জীবন প্রবাহ এবং হার না মানা দৃঢ় মানসিকতা যা বর্তমান প্রজন্মের একজন পাঠককে অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। পরিশেষে লেখকের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।