কবির জঠরে কবিতার প্রারম্ভিক গর্ভধারণ এভাবেই ঘটে। যথার্থে ভাষা ও বোধের শৈল্পিক সৃষ্টি হলো কবিতা। এই ভাব-বোধ অন্তরস্থ প্রক্রিয়ায় ভাবাবেগের স্থানকালে মগজ- মস্তিষ্কে পরিচালিত হয় অনেকটা কবির অজান্তেই- যেখানে ধ্বনি প্রবাহের মাধুর্য গুণসমূহ সৃষ্টি করে স¦রবৃত্ত ও অন্যসব ছন্দের। এর জন্যে কবির ছন্দ-ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজন পড়ে না। কথার অন্তরালবর্তী প্রবহমান ধ্বনি- সৌন্দর্যই কবিতার শরীরে দোলা দিয়ে কথাকে তার জড় ধর্ম থেকে মুক্তি দেয়; ভাষাবোধের এই বিশেষ ভঙিমা বা চালচিত্রকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘কবিতার ছন্দ’ বলে নির্দেশ করেছেন। কবি এস. আই সরকার কবিতার মানুষ। তাঁর প্রমান; তাঁর কবিতার বচন, বাচনভঙিতে নাটকীয় জাদু। এর সঙ্গে ছন্দ-অলংকার- উপমায় উপমিত হয়ে ওঠে তার ভিতরঘরের কথা। অন্তরঙ্গের খানিকটা পরিপূরিত হয় রসে, বাকিটা তার বহিরাঙ্গের অঙ্গভঙিতে আশ্চর্য রূপ লাভ করে। অনতিনিরূপিত গদ্য-ছন্দে দোলা দেয় অনন্য অপরূপ মহিমা- এক মধুর; কোমল অথচ দ্রোহ ও প্রেমের প্রাকৃত ভাষা। কবিতার বিষয় সর্বস¦; বিষয় স¦ভাব কবির বোধের মাপজোখ করার মতো জ্ঞান আমার সামান্য। তাঁর কবিতার অনুষঙ্গ অসাধারণ, যদিও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক কবিতা কিছু আছে; অনুধাবন করছি, তথাপি জীবনে ঘটে যাওয়া এবং ঘটমান কথা সব এবং প্রকৃতি ও সমস্ত রূপবৈভিন্ন্য শিরোনামে উঠে এসছে, তাঁকে উপেক্ষা করার সাধ্য কারো নেই।