বাবুইয়ের ধলপহর (হার্ডকভার)

ঘরটা অন্ধকার। দরজার ফাঁক দিয়ে এক চিলতে আলো আসছে। ঘরে আসা আলোয় নিকানো মেঝের আঁকিবুকি দেখা যায়। বাবুই কাৎ হয়ে শুয়ে আছে নতুন চাদর বিছানো চৌকিতে। নতুন বিছানো চাদর এবং বালিশের ওয়াড় থেকে নেপথলিনের গন্ধ আসছে। বাবুই যখনই নাকটা বালিশের কাছে নামিয়ে আনে, তখনই গন্ধটা তাকে ঝাপটা মারে।
এ বরং সুবিধা হয়েছে। ঘরের পেছনেই বয়ে গেছে পুরনো ছোট্ট নালা। যে নালা দিয়ে ধুকতে ধুকতে নেমে যায় পুরো বস্তির নোংরা পানি। যার রঙ কুচকুচে কালো। চার-পাঁচ ঘরের খোলা টাট্টিখানা বসানো আছে এই নালার ওপরে। এ পর্যন্ত আট-দশবার বাবুই টাট্টিখানায় গেছে। মাথাভর্তি ভাবনা নিয়ে প্রতিবারই নিচে তাকিয়ে দেখেছে বহমান কিলবিলে দৃশ্য। দৃশ্য ও গন্ধ তাকে প্রতিবারই পীড়িত করেছে। ড্রেনের ঐ গন্ধটা মাঝে মাঝেই পাওয়া যায় ঘর থেকে। আর তখনই বাবুই নাকটা চেপে ধরে নেপথলিন মাখা বালিশে।
মেয়েটার প্রচণ্ড সাহস। এ ঘরে একটা মানুষ কাৎ হয়ে শুয়ে আছে এ খবর সে জানে। আলো থেকে অন্ধকারের মানুষটাকে সে দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু মানুষটা তাকে তাকিয়ে দেখছে এ খবর তার জানা।