বেগম রোকেয়ার উত্তরসূরি বলতে যা বোঝায়, আখতার ইমাম ছিলেন ঠিক তাই। ছিলেন অনন্য এক মেধাবী নারী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হল ‘উইমেন্স হল’ (পরবর্তীতে রোকেয়া হল)-এর প্রথম স্থায়ী প্রভোস্ট তিনি। আরও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা বিভাগীয় প্রধান এবং দর্শন বিভাগের প্রথম মহিলা শিক্ষক। শত বাধা ও অপমানেও মাথা উঁচু করে সাফল্যের দরজায় কীভাবে পৌঁছোতে হয় তিনি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আজও সবার সামনে, বিশেষ করে নারীসমাজের তো বটেই। তারই ব্যক্ত করা জীবনকাহিনী থেকে, তার লেখা গল্প থেকে, তাকে নিয়ে লেখা নানাজনের আখ্যান থেকে বের করে এনে সাজানো হয়েছে এই উপন্যাস। আনোয়ারা আজাদ মূলত অধ্যাপক আখতার ইমামের লেখা বিভিন্ন বই পড়ে ও নানাজনের কাছ থেকে তার সম্পর্কে জেনে এই উপন্যাস রচনায় উৎসাহী হয়েছেন। ঘটনার বর্ণনা সত্যের আলোকে প্রাণবন্ত করার জন্য যতটুকু কল্পনার মিশ্রণ দরকার ঠিক ততটুকুই পরিমিতিবোধ কাজ করেছে লেখকের মধ্যে। আখতার ইমাম পঁচিশ বছর বয়সে তিনটি কন্যা সন্তানের জননী হয়ে বৈধব্য জীবন নিয়ে সাফল্যের শিখরে কীভাবে পৌঁছোলেন তারই বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে এই আখ্যানে। প্রায়-বিস্মৃত এক সংগ্রামী নারীর বর্ণাঢ্য জীবনকে পাঠকের সাথে পরিচয় করানোর মধ্যে দিয়ে লেখকের যে আন্তরিক প্রচেষ্টা তা সত্যি প্রশংসনীয়।
Anowara Azad- জন্ম দিনাজপুর শহরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ মধ্যপ্রাচ্যের দিনলিপি (২০০০)। তার প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থ ও উপন্যাসÑলোনা জলের হ্রদ (২০০৩)। ফিরে আসি যদি (২০০৫)। পাঁচজনা (২০০৯)। প্রান্তকাল (২০১০)। শঙ্খকন্যা আখতার (২০১৩)। কিশোর উপন্যাস হ্যালো মি. জ্যাক (২০০৭)। অর্কর ছিল জ্যাক (২০০৮)। কনগ্র্যাচুলেশনস কিপটে রাশিক (২০১১)। ছোট গল্প সংকলন আজকের লাবন্য (২০০৪)। ঘুম (২০০৮)। পাখিদের প্রেম (২০১১)। সম্পাদনাÑআদিবাসীর বিবর্ণ আলাপ (২০১৪)। কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার বই ফেলে এসেছি (২০১০)।