গ্রীষ্মের সকাল। খা খা করে বাড়ছে রোদ। মনে হচ্ছে আজ সূর্যটা মাথার উপরে নেমে এসেছে! বেরসিক গরমে সকালটা তেতে উঠেছে। মাটির গভীর থেকে গরম ভাপ উঠছে। গ্রামীণ কাঁচারাস্তা। রাস্তার চিকচিকে বালি খই ভাজা খোলার মতো গরম। নাঙ্গা পা ফেলে হাঁটা দুষ্কর। গ্রামীণ মানুষ তবুও হেঁটে চলে নাঙ্গা পায়ে। জীবন যুদ্ধে হার না মানার প্রতিজ্ঞা নিয়ে। অসহনীয় তাপে গা থেকে দর দর করে ঘাম ঝরছে। সারা শরীর ভিজে যাচ্ছে পথিকের। জামা কাপড় লেপ্টে আছে শরীরের ভাঁজে ভাঁজে। গ্রামীণ জীবন প্রতিকূলতাপূর্ণ। অবিরাম সংগ্রাম ও পরিশ্রম করে বেঁচে থাকতে হয় গ্রামীণ জনপদে। এহেন গরম আবহাওয়ায় গাছের ছায়ায় নদীর তীর ঘেঁষে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তুমুল আড্ডায় মগ্ন দুই বন্ধু তমাল ও নোবেল। এটাই বন্ধুত্ব। এটাই ছাত্র জীবনের সৌন্দর্য। বন্ধুত্বের কাছে সব কিছুই তুচ্ছ। আসল বন্ধুত্ব অটুট বিশ্বাস, নির্মল ও নিখাদ ভালোবাসায় ঋদ্ধ। গ্রীষ্মের ছুটিতে কলেজ বন্ধ। হাতে বেহিসেবি অঢেল অলস বৈকল্য সময়। তবুও কি যেন চিন্তায় মুষড়ে আছে নোবেলের মন। মুখে সে অভিব্যক্তি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। আচরণে খুব উড়ুউডু ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে! মনটা যেন তার এখনই ফুডুৎ করে উড়াল দিতে চায়। নোবেল জেলা শহরে বোনের বাসায় অবস্থান করে সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছে। ছোটবেলা থেকে নোবেল ও তমাল একই স্কুলে লেখাপড়া করেছে। একই গ্রামে তাদের বাড়ি। কিন্তু এখন আলাদা আলাদা কলেজে লেখাপড়া করছে। তমাল বাড়ি থেকে কলেজে যাতায়াত করে। তাই ছুটিতে দু'বন্ধুর দেখা সাক্ষাৎ হলে অনেক জমে থাকা কথামালা একে অপরের সাথে বিনিময় করে সুখ পায়। দু'জনেই ছুটির দিনগুলোর জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। দীর্ঘদিন পর আজ তেমনি একটি দিন। তবুও নোবেলের মনটা উড়ু উড়ু দেখে তমাল জিজ্ঞাসা করল, কোনো সমস্যা হয়েছে কি দোস্ত, মন খারাপ কেন?