'রশীদ করীমের উপন্যাস: বাত্ময় ব্যক্তিমনের সংশয়িত প্রমোদক্রীড়া'-এমন ঊর্ধ্বকমায় আটকানো চিন্তায় ভাবি রশীদ করীম কেমন লেখক? বাংলাদেশের উপন্যাসে তার অবস্থান কী? তাঁর উপন্যাসের প্রবণতা কেমন? ভাবনাটি মন্ময়মনের, এখনকার। তবে এসব ভাবতে শুরু করি অনেক আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের অনতি-পর। তখন মন ছিল কাঁচা, সমালোচনার রীতি-পদ্ধতি নিয়ে বিশেষ কোনো বোধ বলতে গেলে তৈরি হয়নি। সেই তরুণ বয়সেই প্রষণ্ণ পাষাণ, আমার যত গ্ল- ানি পড়ে ফেলি। কাজটি নিছক ডিগ্রির জন্য ছিল। কিন্তু লেখকের প্রতি আগ্রহটি মনের কোটায় তখনই পয়দা হয়ে ওঠে। ঠিক সেই তারুণ্য ও তোলপাড় মাখা দিনগুলোতে লিটলম্যাগের চর্চার চেতনাও নানাভাবে পুনর্গঠিত হতে থাকে। গবেষণা আর লিটলম্যাগ নিয়ে আলো-আঁধারীর বারান্দায় তখন চলে হোলির উৎসব। টগবগে আবেগের রস, স্বপ্নীল সুতোয় বোনা কিন্নর প্রলুব্ধ সময়, জ্ঞান আর গবেষণার কর্কশ কাঠিন্যে একপ্রকার অবরুদ্ধই ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তো শুধুই একমুখি টানের জায়গা নয়। তাই ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের কেন্দ্রসূত্রে মো. হাবিব-উল-মাওলা (মাওলা প্রিন্স) আমার বন্ধনে বাঁধা পড়ল। প্রণোদনার ঠিক সেই সময়ে মাওলা প্রিন্স চৌকস উদ্যমতা নিয়ে আমার সঙ্গে যুক্ত হয়। তবে তাঁর এই যুক্ততা ওই উৎসবের প্রান্তের কুরুশকাঠিতে-আরও দুই-আড়াই বছর আগে থেকেই। তাঁর সঙ্গে মনের রসায়নও তখন অনেক মাত্রার। সে কাজ করতে আসে, নিছক একাডেমিক পরিমণ্ডলের দায়ে।
জন্ম ১৪ জানুয়ারি ১৯৮৩ লালমনিরহাট। চার্চ অব গড উচ্চ বিদ্যালয়ের এক প্রাণিত পরিবেশে সম্পূর্ণ হয় তার স্কুল পর্যায়ের পুরো পড়াশুনা। তিনি লালমনিরহাট সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্বের উচ্চতর পাঠ গ্রহণ করেন বাংলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘নজরুল ও জীবনানন্দের কবিতায় পুরাণ ও চিত্রকল্প’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জেলা শহরের প্রকৃতিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেড়ে ওঠা এবং বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও কলায় অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে পাঠ নেয়া মাওলা প্রিন্স একজন কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক। পেশায় অধ্যাপক। তিনি ০১ এপ্রিল ২০০৭ সালে বাংলা বিভাগ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক পদে যোগদানের মধ্য দিয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। ০১ এপ্রিল ২০০৮ সাল থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিযুক্ত রয়েছেন। মাওলা প্রিন্সের তত্তাবধানে এখন পর্যন্ত স্নাতক পর্যায়ে ২টি এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ থিসিস সম্পন্ন হয়েছে। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : নিশীথপ্রদীপে শঙ্খঝিনুকের চাষ (২০১৩), দিবারাত্রি প্রেমকাব্য (২০১৪), সব ঠিক, ঠিক কি, ঠিকটা কী (২০১৯) ও আবার বছর কুড়ি পর (২০২০)। প্রবন্ধগ্রন্থ : কালোত্তরের প্রতিশ্রুতি : প্রসঙ্গ সাহিত্য (২০০৯), রশীদ করীমের উপন্যাস : বিষয়বৈভব ও শিল্পরূপ (২০১৪), অনুধ্যানে নজরুল (২০১৭) ও কথাসাহিত্য পাঠ ও রূপতাত্তিক বিশ্লেষণ (২০১৯)। অভিধানগ্রন্থ : নজরুল পৌরাণিক অভিধান (২০২০)। প্রকাশযোগ্যগ্রন্থ : নজরুল ও জীবনানন্দের কবিতায় পুরাণ ও চিত্রকল্প।