আল্লাহ মানুষকে দেখার জন্য চোখ নামক নেয়ামত দিয়েছেন। এ চোখ দিয়ে কোথায় তাকাবে আর কোথায় তাকাবে না, তাও তিনি বলে দিয়েছেন। যেসব জিনিস দেখলে দুনিয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা এবং পরকালে শাস্তি রয়েছে, সেসব বিধান সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। এ মহান নেয়ামতের উত্তম ব্যবহার করা প্রত্যেক সচেতন মানুষের কর্তব্য। চোখের উত্তম ব্যবহার হলো আল্লাহর সৃষ্টি দেখে আল্লাহর পরিচয় লাভ করা। আল্লাহর ভয়ে অশ্রুপাত করা। আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলা। নিষিদ্ধ দৃষ্টিপাত থেকে বেঁচে থাকা। এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি দৃষ্টিপাত করে না উটের দিকে, কীভাবে তা সৃষ্টি করা হয়েছে? এবং আকাশের দিকে, কীভাবে তা ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে? পর্বতমালার দিকে, কীভাবে তা স্থাপন করা হয়েছে? ভূমির দিকে, কীভাবে তা বিস্তৃত করা হয়েছে? (আল কুরআন) . চোখের অপব্যবহার হলো আল্লাহর নিদর্শন দেখেও শিক্ষা গ্রহণ না করা। আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনা। চোখ দিয়ে হারাম জিনিস দেখা। পরনারীকে দেখা। চোখের খেয়ানত করা। চোখের জিনা ও ধর্ষণ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তো বহু জিন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় আছে কিন্তু তা দিয়ে তারা উপলব্ধি করে না। তাদের চোখ আছে তা দিয়ে দেখে না। তাদের কর্ণ আছে তা দিয়ে শ্রবণ করে না। এরা পশুর মতো। বরং ওরা পশুর থেকেও অধিক বিভ্রান্ত। ওরা গাফেল।’ (আল কুরআন) কাজেই চোখের হেফাজত অতীব জরুরি। কথায় আছে চোখে নষ্ট মানেই জীবন নষ্ট। যে তার চোখকে হেফাজত করতে পারল না, সে যেন নিজ হাতে তার আখিরাতকে নষ্ট করল। মাও. তারিক জামিল হাফি. খুব সুন্দরভাবে চোখ হেফাজতের উপকারিতা ও অপকারিতা গল্পাকারে ফুটিয়ে তুলেছেন। যা পাঠকের হৃদয়কে গভীরভাবে ছুয়ে যায়। বিজ্ঞপাঠক মাত্রই তা অনুমেয় করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। আশা করছি, বইটি পাঠক হৃদয়ে বেশ নাড়া দিবে।
তারিক জামিল (যিনি মাওলানা তারিক জামিল নামে অধিক পরিচিত, জন্ম: ১ অক্টোবর ১৯৫৩) একজন প্রভাবশালী পাকিস্তানি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, দায়ী এবং তাবলিগ জামাতের সদস্য। ইসলাম প্রচারক হিসেবে তার সাধারণ জীবনযাত্রা এবং পাশাপাশি উর্দু ও আরবিতে সাবলীল বক্তৃতা তাকে মুসলিম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে। মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, অভিনেতা, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষকে তিনি প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন।[১] শিক্ষাজীবনে তিনি তাবলিগ জামাত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ডাক্তারি পড়াশোনা ছেড়ে নিজেকে ইসলাম শিক্ষায় নিয়োজিত করেছিলেন। ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সমাজসেবা ও শিক্ষায় অবদানের অংশ হিসেবে তিনি মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন, জামিয়া আল হুসায়নিয়া মাদ্রাসা ও মিম একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২১ সালে তিনি এমটিজে ব্র্যান্ড নামে একটি কাপড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে তিনি সবসময় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিম জরিপে শীর্ষ ৫০-এ অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি দুইবার প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছেন।