সদ্য মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করে বেরুনো এক তরুণী, যে সবসময় বাবা-মায়ের সতর্ক নজরদারি ও ভালোবাসার ঘেরাটোপে জীবনের এতটা দিন কাটিয়েছে, তার ইচ্ছে হলো স্বাধীনভাবে কিছু কাজ করার। পরিবারের সাথে অনেক মানসিক লড়াইয়ের পর সে রওনা হলো দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এক অজানা ও অচেনা গন্তব্যে। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল জাতিগত নিপীড়ন ও দমনের মুখে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এক অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সীমিত সম্পদ নিয়ে বিপুলসংখ্যক শরণার্থীদের চাপ মোকাবেলা করতে বাংলাদেশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অভাব যেখানে চরম হয়, ন্যায়-নীতি সেখানে জানালা দিয়ে পালায়। দারিদ্র্য ও অভাবের কষাঘাতে কয়েক লাখ মানুষ অধ্যুষিত একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা দিনের পর দিন নানা রকমের অপরাধের আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য এক অকুতোভয় যুবককে মায়াময় পরিবার ও আপনজনদের ফেলে চলে আসতে হয় এই অপরাধপূর্ণ এলাকায়। পথিমধ্যে কঠিন বাস্তবতা সম্পর্কে অনভিজ্ঞ সেই ডাক্তার তরুণী ও এই অকুতোভয় যুবকের অপ্রত্যাশিত সাক্ষাৎ হয় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। নিয়তি নির্দেশিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলার পথে তাদের অনুভূতির রং বদল ঘটে। ক্ষণিকের পথসঙ্গী থেকে তারা হয়ে উঠে মনোসঙ্গী। কিন্তু যাদের জীবনের মূলমন্ত্র 'কান্ট্রি কামস ফার্স্ট', তাদের কাছে ব্যক্তিপ্রেমের চেয়ে দেশপ্রেম সবসময়ই অগ্রাধিকার পায়। সেই অকুতোভয় যুবক, নব্য তরুণী ডাক্তার ও তাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকা আরও কিছু মানুষের জীবনালেখ্য 'দহনের দিনে জোছনার ফুল'।
মানুষের কর্ম ও চিন্তাভাবনার মধ্যেই আসল পরিচয় নিহিত বলে আফিফা পারভীন বিশ্বাস করেন। তাই তার লেখাই তার পরিচয় বলে তিনি মনে করেন। তবে সাধারণভাবে লেখক নিজেকে একজন মানবিকবোধসম্পন্ন মানুষ বলে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তার প্রথম বই 'এসো নীপবনে' প্রকাশিত হয়েছে একুশে বইমেলা ২০২১-এ। এরপর 'ফেরারি বসন্ত,' 'যাও পাখি বলো তারে,' 'বাতাসে বহিছে প্রেম,' 'শ্বেত পাথরের মালা,' 'কাচবন্দি ভালোবাসা' ও 'অ-তিথির অতিথি' প্রকাশিত হয়েছে। আফিফা পারভীন পড়তে ও লিখতে ভালোবাসেন। যতদিন পরম করুণাময় ইচ্ছে করবেন, ততদিন এই লেখক লিখে যেতে চান।