জীবন সংসার সহজ নয়, একমাত্রিক বা একস্তরীয় নয়। তা বহুস্তরিক, বহুমাত্রিক এবং জটিল। লেখক সেই বহুস্তর, বহুমাত্রার জটিলতাকে ধরার চেষ্টা করেছেন তাঁর 'সংসার থেকে লুকিয়ে' বইতে। যাপিত জীবনের অনুভব এক-একজন লেখকের ক্ষেত্রে এক-এক রকম। কেউ হয়তো ঘটনাধর্মিতায় যান, কেউ বিমূর্ততায়, কেউ সমগ্র ধরেন, কেউ একটা মুহূর্ত, কেউ পরীক্ষানিরীক্ষা ভালবাসেন, কেউ সহজ ন্যারেটিভে গল্প বলেন। বাইশ গজের খেলায় যেমন খেলতে সবাই নামেন, যে যার মতো করে, শেষ পর্যন্ত উদ্দেশ্য তো ব্যাটে-বলে হওয়া, অর্থাৎ কমিউনিকেশন। লেখককে কোথাও গিয়ে পাঠকের সঙ্গে কমিউনিকেট করতে হয়। বিষয়বস্তু, আঙ্গিক, ভাষা, কমিউনিকেশনের এই তিন মাত্রা। চতুর্থ মাত্রা হচ্ছে লেখকের হাতের তাগবাগ, যাকে বলে ‘এক্স ফ্যাক্টর’। উভয় ক্ষেত্রে লেখক শতভাগ সফল। যেখানে সুখ তত গাঢ় নয়, দুঃখ তত চেপে বসতে পায় না। কারণ জীবন থেকে প্রত্যাশাও মাঝারি মাপের। সুখ-দুঃখের চেহারাও যেন বড় চেনা। তার মধ্যে এক-একটা দিন হঠাৎ অন্য রকম। বৃষ্টির সন্ধেয় বাড়ি ফিরতে ফিরতে তারে হাঁটা বৃষ্টির ফোঁটায় আলো পড়ে আচমকা তৈরি প্রিজ়মের মতো। রিপন আহসান ঋতুর 'সংসার থেকে লুকিয়ে' গল্পের ভুবন ওই রকম চাপা আলোয় ভরা। এই আলোয় হঠাৎ-হঠাৎ চোখে পড়ে এক-একটা চরিত্র, যাদের আমরা কখনো চেয়ে দেখার দরকার মনে করি না।