সুনির্দিষ্ট ৩টি অংশে ভাগ করে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে বইটিতে তার রচনাশৈলী উপস্থাপন করেছেন। ১. ভালো বক্তা হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল। ২.ভালো উপস্থাপক হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল ও ৩.ভালো বিতার্কিক হওয়ার বৈজ্ঞানিক কৌশল। অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন,বক্তৃতা,উপস্থাপনা ও বিতর্ক কি আর শেখার বিষয়?? এসব তো এমনিতেই পারা যায় অথবা এসব ব্যক্তি বিশেষের বিশেষ যোগ্যতা। যারা এমনটা ভাবেন তাদের উদ্দেশ্যে বলি দুনিয়ার সব কিছুই শিখতে হয়।মুদির দোকান কিভাবে চালাতে হয়,তাও শিখতে হয়।প্রথমে তার মুনাফা বেশি হয় না,খরিদ্দারও বেশি জোটে না, পরে এসব বিষয়গুলো শেখা হলে, খরিদ্দারও বেশি জোটে ও মুনাফাও ঠিকমতো হয়।নাইয়া যে নৌকা বায়,সেখানেও কিছু শেখার থাকে।অর্থাৎ যেকোনো কাজে সফলতা অর্জনের জন্য কষ্ট স্বীকার ও ত্যাগ স্বীকার করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়।।আর সেই অর্জিত অভিজ্ঞতাই হলো প্রকৃত শিক্ষা। (১) নন্দিত শিল্প হিসেবে বক্তৃতা কি,তা কেমন হওয়া উচিত,ভালো বক্তা হওয়ার উপকারিতা,সফল নেতা হতে ভালো বক্তৃতার গুরুত্ব,সুশীল সমাজের কাছে নিজেকে উপস্থাপনের জন্য অসাধারণ বক্তৃতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, বক্তৃতাকে প্রাণবন্ত করার কৌশল,বক্তৃতা থেকে ভীতি কাটানোর উপায়,বিভিন্ন ধরনের বক্তৃতার নমুনা, এবং সব শেষে দুনিয়া কাপানো কিছু জনপ্রিয় ভাষণ বা বক্তৃতা (বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর ভাষণ,৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ,ভারতছাড় আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধীর ভাষণ,বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নেলসন ম্যান্ডেলার ভাষণ,গৃহযুদ্ধ অবসানের পরবর্তীতে আব্রাহাম লিংকনের ভাষণ,বর্ণবাদের বিরুদ্ধে মার্টিন লুথার কিং এর ভাষণ,উইন্সটন চার্চিলের ভাষণ,বারাক ওবামার সেরা সাত ভাষণ,সাবেক উপাচার্য আবু সাঈদ চৌধুরীর ভাষণ) আবারো মনে পড়ে গেল সেই দিনগুলির কথা যে সময় এসব বিখ্যাত ভাষণ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ শ্রদ্ধেয় সাহাদাত স্যার আমাদের পড়িয়েছিলেন ও উৎসাহিত করেছিলেন। ,এসব বিষয় অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যুক্তিযুক্তভাবে লেখক তার বইয়ে উপস্থাপন করেছেন। আমেরিকান রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট তার নিজের পুত্র জেমসকে ভাষণের মূলমন্ত্র দিয়েছিলেন,”তোমাকে যখনই বলতে বলা হবে – সত্য বল,সরল বল,সংক্ষিপ্ত বল এবং বসে পড়”। “যে বক্তার বক্তৃতার সময় শ্রোতারা কথা বলার সুযোগ পায়না বা কথা বলার প্রয়োজন বোধ করেনা শুধু শুনবার আগ্রহে মেতে থাকে, সেই বক্তার বক্তৃতাই সফল বক্তৃতা।” (২) এর পরের অংশে লেখক, উপস্থাপনা কি,উপস্থাপনার উদ্দেশ্য,ভালো উপস্থাপক হওয়ার উপকারিতা,ভালো ও গ্রহণযোগ্য উপস্থাপনার বৈজ্ঞানিক কৌশল,একজন সফল উপস্থাপকের কতিপয় গুণাবলী,কিছু সফল বাঙালি উপস্থাপকের বেড়ে ওঠার গল্প ও পরিচিতিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সমাবেশ ঘটিয়েছেন বইটিতে। “” উপস্থাপনা একই সঙ্গে শোনা ও দেখার বিষয় হলেও বেতারে শুধু শোনার বিষয়টি থাকে।এই জন্যেই উপস্থাপনা করার সময় ভাষা ও বাচনভঙ্গি চমকপ্রদ হতে হয়”” “”যিনি কর্মবিমুখ অলস মানুষদের জীবনে নতুন চিন্তা চেতনার খোরাক দিয়ে তাদেরকে জাগিয়ে তোলার ক্ষমতা রাখেন- তিনি নিঃসন্দেহে সফল উপস্থাপক হতে পারেন””।