বিশ্বাস মানবজীবনের এমন একটি বিষয় যা তার জীবনের গতিপথ নির্ধারণ করে দেয়। এটা এমন এক ভিত্তি যাকে অবলম্বন করেই মানুষ তার সমগ্র জীবনধারা পরিচালনা করে। যে মৌলিক জীবনদর্শনকে কেন্দ্র করে দুনিয়ার বুকে মানুষ আবর্তিত হচ্ছে, যে আদর্শ ও বিশ্বাসকে লালন করে তার সমগ্র জীবন পরিচালিত হচ্ছে তাকে ইসলামী পরিভাষায় ‘আক্বীদা' শব্দ দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়। 'আকীদা এমন এক অতুলনীয় শক্তির আঁধার যা একজন মুসলিমকে তার আদর্শের প্রতি শতভাগ আস্থাবান করে তুলে এবং জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সেই বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটাতে বিরামহীনভাবে সচেষ্ট রাখে। অপরপক্ষে মানবজগতের যাবতীয় পথভ্রষ্টতার মূলে রয়েছে এই মৌলিক আকীদা থেকে বিচ্যুত হওয়া। এজন্য একজন মুসলমানের জন্য আকীদা-বিশ্বাসের ব্যাপারে সুস্পষ্ট জ্ঞান রাখা এবং সে বিশ্বাসের যথার্থতা নিশ্চিত করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিশ্বাসের বিশুদ্ধতা ব্যতীত কোনো ব্যক্তি প্রকৃত অর্থে মুসলিম হতে পারে না। প্রতিটি কথা ও কর্ম যদি বিশুদ্ধ আকীদা ও বিশ্বাস থেকে নির্গত না হয় তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। মানুষ যুগে যুগে পথভ্রষ্ট হয়েছে মূলতঃ আকীদার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি ঘটার কারণে। এজন্য এ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহ জানা অপরিহার্য। মুসলিম জীবনের অত্যাবশ্যক এই কাজটির খুব সহজে আয়ত্ব করার লক্ষেই শাইখুল ইসলাম মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহহাব রাহিমাহুল্লাহ “সালাসাতুল উমূল ওয়াআদিল্লাতুহা” নামে একটি রিসালা রচনা করেছেন। যাতে আকীদার মৌলিক বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এই অতি গুরুত্বপূর্ণ রিসালাটি খুব সহজ ও সাবলিল বাংলায় অনুবাদ ও সম্পাদনা করেছেন আকীদা বিষয়ে ডক্টরেট করা একমাত্র বাংলাভাষী এবং অসংখ্য গ্রন্থের রচয়িতা ও সম্পাদক প্রফেসর ড. আবুবকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিযাহুল্লাহ। যাতে তিনি প্রতিটি কথার রেপারেন্স যুক্ত করে দিয়েছেন। সুন্দর উপস্থাপনায় শিশু-কিশোরসহ সকল পাঠকদের জন্য একে আরও সহজবোধ্য করে দিয়েছেন। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি যেনো গ্রন্থকার, সম্পাদক ও যারা এতে মেহনত করেছেন সকলের জন্যই যথোপযুক্ত প্রতিদান দান করেন।