এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের সংযোগস্থলে অবস্থিত আফগানিস্তান হাজার বছর ধরে কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। এর অন্তর্গত প্রাচীন গমনপথগুলো এবং ভারত, মধ্য এশিয়া, চীন, পারস্য ও এগুলোর আশপাশের অঞ্চলগুলোর মাঝখানে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের কারণে অঞ্চলটি ঘনঘন বহিঃআক্রমনের শিকার হয়েছে, সামরিক ও শান্তিপূর্ণ উভয় প্রকারের। ফলশ্রুতিতে, আধুনিক আফগানিস্তান একটি সাংস্কৃতিক ও নৃতাত্ত্বিকভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ, কিন্তু এমন একটি, যেটি সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও এর জনগণের গণ বাস্তুচ্যুতির দ্বারা ব্যাতাক্ষুব্ধ। এই মুন্সিয়ানাসমৃদ্ধ, দায়িত্বশীল ও সচিত্র ইতিহাসে, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ কিন্তু নিয়ত-পরিবর্তনশীল একটি অঞ্চলের সাধারণ একটা উপজাতীয় সঙ্গ থেকে কিভাবে একটা আধুনিক জাতি-রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়েছে আফগানিস্তান, সেই বৃত্তান্ত তুলে ধরেছেন জোনাথন। চল্লিশ বছরের নিরবচ্ছিন্ন পড়াশোনা ও গবেষণার আলোকে, আফগানিস্তানের সমসাময়িক সংঘাতকে এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে স্থাপন করেছেন লী, এবং দেশটি সম্পর্কে পশ্চিমের অসংখ্য পূর্বানুমান-প্রসূত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। শক্তিশালী র্দূরাণি রাজতন্ত্রের ওপর সুনির্দিষ্টভাবে আলোকসম্পাত করেছেন, ১৭৪৭ সালে যারা দেশটিকে ঐক্যবদ্ধ করার পর টানা আড়াইশো বছর শাসন করেছে, সাফাবিদ পারস্য ও মুঘল ভারতের মক্কেল হিসেবে রাজবংশটির উৎপত্তির কাল-পর্যায়ক্রম উপস্থাপন করেছেন লী: প্রত্যেক শাসকের শাসন এবং উপজাতীয়, নৃতাত্ত্বিক, আঞ্চলিক ও ধর্মীয় প্রতিদ্বন্দ্বি উপদলগুলোর মধ্যে ভারসাম্য স্থাপনে তাদের প্রচেষ্টা; সামাজিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের জন্যে সংগ্রাম; ইসলামি ও কম্যুনিস্ট দলবাজির উত্থান। পথিমধ্যে, পারস্য ইতিহাস থেকে নতুন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অন্তর্দৃষ্টি হাজির করেছেন, আফগান সরকারি কর্মকর্তা, ব্রিটিশ সরকার ও ইন্ডিয়া অফিসের মহাফেজখানার স্মৃতিকথা, এবং সম্প্রতি প্রকাশিত সিআইএ প্রতিবেদন ও উইকলিক্স নথিপত্র। এছাড়াও তার নতুন অধিশ্রয়ণ দেশটির বৈদেশিক সম্পর্ক, এর অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, এবং বিদেশী সামরিক হস্তক্ষেপের প্রভাবের উপর, যেমন: ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।’