কুরআনুল কারীম মহান আল্লাহর অসীম ফযীলতপূর্ণ বাণী, এক অমূল্য রত্ন ভান্ডার। সৃষ্টির সেরা মানবকুলের হিদায়াত লাভের এক প্রদীপ্ত আলোকশিখা। সার্বজনীন এক জীবন বিধান। দুনিয়ার সফলতা ও কল্যাণ, আখেরাতের নাজাত ও মুক্তির শাশ্বত পথ- নির্দেশনা। যুগ যুগ ধরে যার হেফাযতের দায়িত্ব মহান আল্লাহ নিজেই গ্রহণ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, 'আমি স্বয়ং কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই এর হেফাযতকারী।' কুরআনুল কারীমের যেখানে তাওরাত ও ইঞ্জিলের আলোচনা এসেছে, সেখানে বলা হয়েছে, ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের আল্লাহর গ্রন্থ তাওরাত ও ইঞ্জিলের হেফাযতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ কারণে যখন ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা তা হেফাযতের দায়িত্ব পালন করেনি, তখন গ্রন্থদ্বয় বিকৃত ও পরিবর্তিত হয়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে কুরআনুল কারীমের হেফাযতের দায়িত্ব মহান আল্লাহ স্বয়ং গ্রহণ করেছেন। ফলে শত্রুদের শত ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত সত্ত্বেও এর একটি নুকতা বা যের-যবরে পরিবর্তন আসেনি। কুরআন নাযিলের পর থেকে এ যাবত চৌদ্দশত বছর অতীত হয়ে গেছে, স্বীয় ধর্মের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুসলমানদের ত্রুটি, উদাসীনতা ও অমনোযোগিতা সত্ত্বেও কুরআনুল কারীম মুখস্থ করার ধারা পৃথিবীর সর্বত্র পূর্বের মতোই অব্যাহত রয়েছে। প্রতি যুগেই লাখো লাখো; বরং কোটি কোটি মুসলমান, যুবক, বৃদ্ধ এবং বালক-বালিকা এই কুরআনকে বুকে ধারণ করছে। তাদের অসীম মর্যাদা ও ফযীলত সম্পর্কিত অসংখ্য উদ্ধৃতি বিদ্যমান। 'মাকারিমুল হাফাযাহ' হাফেযে কুরআনের সেসব মর্যাদা ও ফযীলত সম্পর্কিত কুরআন-হাদীসের সেই উদ্ধৃতিসমূহেরই একটি সংকলন। মর্যাদা ও ফযীলতের পাশাপাশি হাফেযে কুরআনের দ্বারা সংঘটিত কতিপয় চমৎকার ঘটনাও এতে উদ্ধৃত হয়েছে। আরও উদ্ধৃত হয়েছে হাফেযে কুরআনের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়সমূহ। আল্লাহ তায়ালা এর দ্বারা প্রতিটি মুসলিম সন্তানকে হাফেযে কুরআন হওয়ার তাওফীক দান করুন। পাশাপাশি এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের নাজাত ও মুক্তির ব্যবস্থা করুন। আমীন।