বাংলাদেশ ‘অরক্ষিত’। বাংলাদেশ সব দিক থেকেই শত্রু পরিবেষ্টিত। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ কিভাবে টিকে রয়েছে সেটাই বিস্ময়ের। ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, পরাশক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিরোধ তীব্র হচ্ছে, মেরুকরণ ঘটছে; এরই মধ্যে জায়নিস্ট কলোনিয়াল রাষ্ট্র ইজরায়েল গাজায় অবিরাম বোমা নিক্ষেপ ও নির্বিকার গণহত্যা চালিয়ে বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাস্তবতায় নিজেদের রক্ষা করবার কর্তব্য আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক আলোচনার প্রধান বিষয় হবার কথা বাংলাদেশের বুদ্ধিবুত্তিক ও রাজনৈতিক চিন্তায় সম্পূর্ণ এবসেন্ট! থতমত খেতে হয়। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের কালপর্বে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নিতান্তই সোনার পাথরবাটি সেকথা মজহার এই বইতে প্রায় দুই দশক আগে তুলে ধরেছিলেন। একালে রাষ্ট্র পুঁজির স্ফীতি ও পুঞ্জিভবনের হাতিয়ার মাত্র। সার্বভৌমত্ব রক্ষার সস্তা ও অন্তঃসারশূন্য রাজনীতি বুঝতে হলে এই বই অবশ্যই পাঠ্য। সবার আগে চাই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিশাবে নিজেদের গঠন এবং বিশ্বব্যবস্থায় সঠিক রাজনীতি ও সমর নীতি। কোন পরজীবী গণবিচ্ছিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষা করতে পারবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সাফল্যের পেছনে ছিল সৈনিক-জনতার মৈত্রী। পঁচাত্তরের সাতই নভেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা হুমকির মধ্যে পড়লে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিশাবে সৈনিক ও জনতার বৈপ্লবিক মৈত্রীই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিশাবে আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল। এই বৈপ্লবিক মৈত্রীর মুহূর্ত বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। অন্যদিকে এই মৈত্রীর অভাবই বিডিআর গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। অন্যদিকে এই মৈত্রীর অভাবই বিডিআর হত্যাযজ্ঞ ঘটাবার শর্ত তৈরি করে।
জন্ম ১৯৪৭ সালে, নোয়াখালী। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা : ঔষধশাস্ত্র ও অর্থনীতি, প্রিয় স্মৃতি : মাইজদী কোর্ট, প্রিয় স্থান : বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা নয়াকৃষির বিদ্যগাঘর। তিনি একজন বাংলাদেশি কবি, কলামিস্ট, লেখক, ঔষধশাস্ত্রবিদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বুদ্ধিজীবী, সামাজিক ও মানবাধিকার কর্মী এবং পরিবেশবাদী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে ওষুধশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের দি নিউ স্কুল ফর সোশাল রিসার্চ থেকে অর্থশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সামাজিক অর্থনীতিতেও গবেষণা করেছেন। চিন্তা নামক একটি পত্রিকার সম্পাদক মজহার উবিনীগ এনজিও গঠন করে নয়াকৃষি আন্দোলনও শুরু করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ হল: প্রস্তাব, মোকাবিলা, এবাদতনামা ও মার্কস পাঠের ভূমিকা।