আল্লাহ তাআলা মানুষকে ভাষা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এর মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর তাওহিদের সাক্ষ্য দেয় এবং অন্যদেরকে সেদিকে আহ্বান করে। শয়তানের প্ররোচনায় কেউ একে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবহার করে। ইসলামে ভাষা ব্যবহার ও বয়ান-বক্তৃতার স্বতন্ত্র অবস্থান রয়েছে। ইসলাম আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে নিজে ইসলাম মেনে চলার পাশাপাশি অন্যকেও ইসলামের প্রতি আহ্বানের। মুসলমান নিজে যেমন সিরাতে মুস্তাকিমে চলবে,অন্যদেরকেও সিরাতে মুস্তাকিমে চলার প্রতি উৎসাহী করবে। আর মানুষকে ইসলাম ও সিরাতে মুস্তাকিমে উদ্বুদ্ধ করা কিংবা দীনের আহ্বান পৌঁছে দেওয়ার সহজ ও প্রধানতম উপায় হচ্ছে বয়ান,বক্তৃতা বা আলোচনা। বক্তৃতার মোহনীয় ও আকর্ষণীয় প্রভাব থাকায় তা মানুষকে দ্রুত প্রভাবিত করে এবং অন্তরকে আকৃষ্ট করে। এভাবে দীনের পথে দাওয়াত দানকারীদের অনুপ্রাণিত করে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন : وَمَنۡ اَحۡسَنُ قَوۡلًا مِّمَّنۡ دَعَاۤ اِلَی اللّٰهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ. ‘আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম,যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়,সৎকর্ম করে এবং বলে,অবশ্যই আমি আনুগত্য স্বীকারকারীদের একজন?’ সাধারণ মানুষের ওপর ওয়াজের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এর মাধ্যমে বহু মানুষের আমল-আকিদা দুরস্ত হয়। মানুষ দাওয়াত ও তাবলিগে যাওয়ার উৎসাহ পায়,হক্কানি আলেম ও পীর-বুযুর্গদের সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পায়। ওয়াজের ব্যাপকতার কারণে চরিত্র বিধ্বংসী বিভিন্ন অপসংস্কৃতিমূলক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। সমাজে চলমান নানাবিধ বিশৃঙ্খলা দূরীকরণে ওয়াজ কার্যকরী ভূমিকা রাখছে,এটা অস্বীকারের সুযোগ নেই। সুতরাং যারা ইসলামের জ্ঞান অর্জন করে এবং তা মানুষকে শিক্ষা দেয়,তাদের কর্তব্য হচ্ছে,কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে তা করা। দুনিয়ার মোহ যেন তাদের আকৃষ্ট না করে। পার্থিব ও ক্ষণস্থায়ী চাকচিক্য যেন জান্নাতের পথে অন্তরায় না হয়। (সংক্ষেপিত)