রহিম সাহের ও রহিমার লাশ বাড়িতে আনা হয়। বাড়িটি আজ কেন জানি অন্ধকারাচ্ছান্ন। মনে হয় বাড়িটি তাঁদের জন্য কাঁদছে। নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ছেলে ও বৌমার শত অত্যাচার ও নির্যাতন সত্বেও তারা এ বাড়ি থেকে কখনো যেতে চাননি। কারণ এই বাড়িটি তাঁরা কষ্ট করে নির্মান করেছিলেন। বাড়ির প্রতিটি জায়গায় তাদের হাতের ছোঁয়া ও স্মৃতি জড়িয়ে আছে।ছেলেকে টেলিফোনে বাবা-মায়ের মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়। কিন্তু ট্রেনিং ছেড়ে এখন তার পক্ষে কোনোভাবে আসা সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেয়।
বাধ্য হয়ে পাড়ার গন্যমান্য এবং সর্বস্তরের জনসাধারণের সিন্ধান্ত অনুযায়ী রহিম সাহেব ও রহিমার লাশ বাড়ির আঙ্গিনায় পাশাপাশি দু'টি কবরে দাফন করা হয়। বেঁচে থাকতে ছেলে ও বৌমার নির্মম অত্যাচার, অবজ্ঞা আর অবহেলায় যে বাড়িতে তারা এক মুহূর্ত শান্তিতে থাকতে পারেননি। এখন সেই বাড়িতে তাঁরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে অনন্তকাল ধরে চির শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকবেন। ছেলে আবির আর বৌমা রিয়া আর কখনো তাদেরকে এ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবে না। কবর দু'টি ছেলে ও বৌমাকে তাদের অত্যাচার আর অবিচারের কথা সবসময় স্মরণ করিয়ে নীরবে সাক্ষি হয়ে থাকবে। আর এটাই আবির ও রিয়ার জন্য চরম শাস্তি।
ড. মির্জা গোলাম সারোয়ার পিপিএম দিনাজপুর জেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দিনাজপুর ও পাবনা জেলা স্কুল, পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে যথাক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে সন্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দৈনিক সমকাল, দৈনিক বাংলা, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন, দৈনিক চট্টগ্রাম, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার, শীর্ষ অর্থনীতি সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কলাম, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, কবিতা, ছড়া, ফিচার ইত্যাদি লিখে থাকেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি পারিবারিক পত্রিকা মাসিক ফুলকুঁড়ির নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২৩ টি সাহিত্য সংগঠনের সাথে জড়িত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন, চুয়াডাঙ্গার শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যান সমিতির।আজীবন সদস্য। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭০ টি। তিনি শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু সাহিত্য পুরস্কার,মাদার তেরেসা, ইউনেস্কো,পদক সহ এ পর্যন্ত ৭৫ টি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যান সমিতির পক্ষ থেকে তাঁকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। পুলিশে হিসেবে চাকুরি করাকালীন তিনি রাষ্ট্রপতি ও জাতিসংঘ পদক প্রাপ্ত হন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনের জন্য নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলা পরিষদ কর্তৃক তাঁকে স্বর্ণপদক এবং র্যাবে চাকুরি করাকালীন সেরা কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে আইজিপি পদক প্রদান করা হয়।