শৈল্পিক শব্দের বাতিঘর হয়ে উঠছে আমাদের সুজানগর, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবী প্রগতিশীল লেখকদের লেখা উঠে এসেছে বিভিন্ন আঙ্গিকে। বহুমান নদীর স্রোতের মতোই মানব জনম এখানে ভাঙাগড়া, পিছুটান, মায়া মমতা, প্রতারণা, প্রেম, বিরহ, ব্যথা, বেদনার শৈল্পিক এক মায়ার সেলাইবিহীন কামিজ তৈরি হয়েছে। জাগতিক পৃথিবীর মায়াকে উপেক্ষা করে জীবন প্রাণবন্ত ও সজীব হয়ে উঠেছে। গ্রামীণ জীবনের হারিয়ে যাওয়া শব্দের অলৌকিক গঠন শৈলীতে বাংলার বিশুদ্ধ শব্দের তরুণ কারিগর তাদের ভেতর থেকে কেউ কেউ কবি হয়ে উঠবে সদ্য প্রস্ফুটিত গোলাপের ন্যায়। সেই প্রত্যাশা করা স্বাভাবিক। আমাদের সুজানগর মূলত একটি শিল্প সাহিত্য ইাতহাস ও তরুণ ছেলেমেয়েদেরকে বইমুখী করার প্রত্যয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক কাজ করছে সেই সঙ্গে সমাজকে জাগিয়ে তোলার দুর্বার এক প্রত্যয়ে নেমেছে। মানব জনম হলো গল্পের দরজার চৌকাঠ পেরিয়ে গোপনে নিজের সঙ্গে দেখা করা এক ক্লান্ত দুপুর। এই গল্পের কোনো রাজসাক্ষী থাকে না। একাকিত্বের দুর্বিষহ যন্ত্রণায় নিজেকে খুন করা হয়তো সহজ, তবুও মানুষ বেঁচে থাকে আশায় কেউ একজন ফিরে আসবে। মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে নিতে হয় মানুষ মূলত একা। তবুও বেঁচে থাকার তাগিদে একজন বিশ্বস্ত মানুষ খেঁাজে সবাই। গভীর সমুদ্রের বুক থেকে ঝিনুকের মুক্তা কুড়িয়ে আমাদের সুজানগর তৃতীয় সংখ্যার পাণ্ডুলিপি। যেখানে লিপিবদ্ধ হয়েছে না বলা সব গল্প; মানুষের অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মলাটে বন্দি হয়েছে অনুভূতির ছায়া—লিপি। মানুষ সব জায়গায় নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে, শুধু জীবনের কঠিন সত্য গল্পের কাছে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে না। খুচরা পয়সার মতো শব্দ হতে থাকে। দূর থেকে শোনা যায় বেদনার সাইরেন। কেউ কাউকে এড়িয়ে গেলে সে নিজেই হারিয়ে যায় মনের উঠোন থেকে চিরতরে। মানব প্রেমের সুতা সেলাইয়ে আন্তরিক, বিনীয়ের সঙ্গে আমাদের সুজানগর কাজ করে যাচ্ছে।
প্রকৌশলী আলতাব হোসেন ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জুন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার হাটখালি ইউনিয়নের সাগতা গ্রামের শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুর রাজ্জাক শেখ এবং মাতা রুবিয়া খাতুন। তিনি দুই বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোটো। পারিবারিকভাবে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে স্বপ্না খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শিক্ষা জীবনে তিনি মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম জিপিএ ৫ পান এসএসসিতে এবং পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি একটি স্বনামধন্য ওয়াশিং প্ল্যান্টের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেকশনে কর্মরত আছেন, যেখানে তিনি নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন। আলতাব হোসেন সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশ এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত অলাভজনক সংগঠন ‘আমাদের সুজানগর’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক। শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘আমাদের সুজানগর’-এর সম্পাদক এবং ‘আমাদের সুজানগর’ ওয়েব ম্যাগাজিনের (amadersujangar.com) সম্পাদক ও প্রকাশক তিনি। এছাড়া তিনি ‘অন্তরের কথা’ ধারাবাহিক লাইভ অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক, যেখানে কবি-সাহিত্যিক ও গুণিজনের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা হয়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আছেন এবং সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সহায়তায় নিয়োজিত থাকেন। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধ, গুণিজনের জীবনী ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে ভালোবাসেন। তাঁর এই বহুমুখী কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি সমাজে একজন প্রশংসিত ও সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি বিশ্বাস করেন, সঠিক শিক্ষা এবং সঠিক দিকনির্দেশনা সমাজের পরিবর্তন আনতে পারে। তাই তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখতে সদা সচেষ্ট।