সােফায় দু’পা মুড়ে বসে একটা পত্রিকা পড়ছে মুমু। হঠাৎ টেলিফোন বাজল, চোখের সামনে থেকে কাগজের আড়ালটা সরাল ও। বিরক্তি করে ভ্রু কুঁচকে টেলিফোন সেটটার দিকে চাইল। “অসহ্য” বলেই সােফা থেকে নেমে রিসিভারটা তুলে নিল কানে। ওপাশ থেকে পুরুষ কণ্ঠ শুনেই মুমু বুঝল রূপম নামের সেই ছেলেটা, এ ছেলেটা মুমুর অসহ্য। কে বা কারা কোন পরিচয় নেই। অযথা রিং করবে। নিপাট ভাল মানুষের মত বলবে “নীলু আছে, নীলু? জরুরী কথা।” এ বাসায় নীলু নামের কেউ থাকে না। অনেক দিন ছেলেটাকে বলে দেয়া হয়েছে। তবুও যেন ওর বিশ্বাস হয় না। আজও ঠিক তাই হল। ওপাশ থেকে সে ছেলেটা বলল, নীলু আছে নীলু একটা জরুরী কথা, মেজাজ খারাপ হল মুমুর। ‘যত্তসব ইউজলেস কল” বলেই কড়াশ করে রেখে দিল রিসিভারটা। রিসিভারটা রাখতে না রাখতেই আবার বেজে উঠল ফোনটা। মুমু কপাল কুঁচকে সিরিভারটা ক্র্যাডেল থেকে সরিয়ে রাখল নিচে। চুপচাপ এসে আবার পত্রিকায় মন দিল। কিন্তু প্রত্রিকার অক্ষরগুলাে যেন গুলিয়ে গিয়ে শুভ্রর চেহারাটা ভেসে ওঠে চোখে, যার চোখে জীবনের অর্থ খুজে পেয়েছিল মুমু। যাকে নিয়ে গাঁথা যায় সাজান গোছান সুখকর মালা। কেন জানি দিন দিনই বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে! কোথা থেকে এক ঝড় এসে মুমুর ভালবাসার সােনালী দিনগুলােকে অন্ধকার করে দিল। এনে দিল নিকষ কালাে রাত। কারণ শুভ্র এ্যাডিক্টেড। ড্রাগ এ্যাডিক্টেড। কিন্তু মুমুতাে এমন বেশি কিছু চায়নি ওর কাছে! ও চেয়েছে শুভ্রর বাঁধনহারা এ্যাডিকটেড জীবনের গতি-সংস্কারে ভেসে যাক। |একে একে স্মৃতির ডায়রী উল্টে চলে ও। স্বপ্নভরা পৃথিবীর বুকে একটি অর্থ খোঁজে ও। এমন কি দুঃখ আছে ওর যা প্রশমনের জন্য ড্রিংকস করতে হবে?