গত দুই দশকে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি আরবি কবিতার জনপ্রিয়তা পুনরুজ্জীবিত করে এর আবেদন ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে। আরবি কবিতা এখন ক্যাফে, আর্ট ফেস্টিভ্যাল এবং রেডিওতে সম্প্রচার থেকে শুরু করে টিভি শো, বিবাহ এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পর্যন্ত জনসমক্ষে পঠিত হয় এবং প্রচার করা হয়। আরব কবিরা ক্লাসিক গীতিকবিতা, আধুনিক গীতিকবিতা এবং মুক্তগদ্যসহ বিভিন্ন ফর্ম এবং শৈলীতে লেখেন। আরবি কবিতা পাঠ এবং কথ্য ভাষায় আবৃত্তি বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে মিশর, ইরাক, লেবানন, সৌদি আরব, মরক্কো এবং জর্ডানে এর বিস্তৃত শ্রোতা খুঁজে পাওয়া যায়। আরবি কবিতাগুলি বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। কবিতা লেখা, পড়া এবং তাকে আবিষ্কার করতে অন্তর্দৃষ্টি এবং শব্দের ভালোবাসা দ্বারা পরিচালিত উত্তেজনাময় এক বিস্ময়কর অভিযাত্রায় যেতে হয়। এটি একটি ব্যক্তিগত ভ্রমণ। সমসাময়িক আরব কবিরা আগের চেয়ে আরও বৈচিত্র্যময় ফর্ম এবং শৈলীতে লিখতে পারেন, কিন্তু তারা এখনও পাঠক এবং শ্রোতাদের বিমোহিত ও আবর্তিত করতে বিস্ময়ের সঙ্গে আরবি লিরিসিজম, রূপক এবং চিত্রকল্প একত্রে ব্যবহার করে আমাদের যুগের সারমর্মকে ধরে রেখেছেন। আরব বিশ্বের অনেক আধুনিক লেখক ইমান মারসাল, নুরি আল-জাররাহ এবং মারাম আল-মাসরিসহ অনেক কবি কবিতা অনুশীলনের মাধ্যমে তাদের সাহিত্যিক জীবন শুরু করেছিলেন। তারা এটি করার মাধ্যমে শব্দের যত্ন নিয়ে, বিশ্বকে নতুন করে দেখে এবং গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে অতীন্দ্রিয় কিছু খুঁজে আরবি ছন্দ এবং সূক্ষ্মতার একটি ধারণা অর্জন করেছেন। সমাজ বা রাষ্ট্র বা সময় বা মানুষ যখনই অত্যাচার ও সর্বগ্রাসী সন্ত্রাসী আক্রমণের শিকার হয় তখনই কবিরা মানুষের আত্মার রক্ষক হয়ে রুদ্র মুর্তিতে আভির্ভূত হন। মাহমুদ দারবিশের একটি বিখ্যাত কবিতা, ‘আমি একজন আরব’, ১৯৬০-এর দশকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে লেখা হয়েছিল। এখনও অনেক আরবি কবিতা বিশ্ব সাহিত্যে প্রবেশের বাকি রয়েছে। অনুবাদ করা হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, আল-মুতান্নাবির রচনাবলী খুঁজে পাওয়া যায়নি অথচ তাকে কেউ কেউ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আরব কবি বলে মনে করেন। সাহিত্যের যেকোনো অনুবাদের মধ্যে সবসময় একটি ফাঁক থাকে যদি লেখকের কবিতা এবং জীবন সম্পর্কে নিজ ভাষায় পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত অনুপস্থিত থাকে। আরবি কবিতার ইতিহাস ও ভূগোল সংক্ষিপ্ত করা সহজ কাজ নয়। নির্বাচিত দশজন কবিকে কোনো নির্দিষ্ট ক্রমে তালিকাভুক্ত করা হয়নি এবং এটিকে শুধুমাত্র একটি বিস্তৃত বিশ্বের প্রবেশদ্বার হিসেবে মনে করা যেতে পারে।
কবি এনামূল হক পলাশ। ১৯৭৭ সালের ২৬ জুন নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদে চিরাম গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস একই উপজেলার বামনগাঁও গ্রামে। পিতা মরহুম এমদাদুল হক, মাতা নুরুন্নাহার হক। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে কবি সবার বড়। কবি উদ্ভিদ বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৯৪ সালে উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি থেকে প্রকাশিত মাটির সুবাস পত্রিকায় একটি কবিতা প্রকাশিত হয়। যা ছিল ছাপার অক্ষরে তাঁর প্রথম কবিতা। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময় কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। ২০০৩ সাল থেকে ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। তাঁর স্ত্রী মাহবুবা আক্তার সুমা পেশায় শিক্ষক। তিনি এক সন্তানের জনক।
২০০৯ সালে তার প্রথম কবিতার বই ‘অস্তিত্বের জন্য যুদ্ধ চাই’ প্রকাশিত হয়। এছাড়া অন্য কাব্যগ্রন্থ হলো- জীবন এক মায়াবী ভ্রমণ, অন্ধ সময়ের ডানা, অন্তরাশ্রম, মেঘের সন্ন্যাস, পাপের শহরে, তামাশা বাতাসে পৃথিবী, জল ও হিজল, অখণ্ড জীবনের পাঠ, লাবণ্য দাশ এন্ড কোং। প্রাচীন আরবি সাহিত্যের অনুবাদের বই ধর্মবিশ্বাস আখ্যানের মত সুন্দর এবং কবিতার অনুবাদ বই মু—আল্লাক্বা। তার কিছু কবিতা নিয়ে ইংরেজিতে ভাষান্তরিত বই CROSSING FORTY NIGHTS প্রকাশিত হয়। জমি নিয়ে ভূমি ব্যবস্থাপনার সরল পাঠ তার বই। শিশুতোষ বই কলমি লতার ফুল, মগড়া নদীর বাঁকে, বইয়ের পাতায় ফুলঝুরি।
তিনি বাংলা ভাষার সহজিয়া ধারার একজন প্রতিশ্রুতিশীল কবি, লেখক, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক ও গীতিকার। অন্তরাশ্রম নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন এবং একই নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন পরিচালনা করেন। তিনি গণতন্ত্রের গান ও রাত্রির গান নামক দুটি গানের গীতিকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর এ দুটি গান সহ বাউল জন্মের গান নামক আরেকটি গান দেশে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কবি নির্মলেন্দু গুণের প্রতিষ্ঠিত কবিতাকুঞ্জর প্রথম পরিচালক হিসেবে তিনি নিযুক্ত আছেন।