"দ্য ফিফথ মাউন্টিন" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: খৃস্টপূর্ব ৮৭০-এর গোড়ার দিকে ফিনিশিয়া নামে পরিচিত একটি জাতি, ইসরায়েলিরা যাদের লেবানন বলে ডাকত, প্রায় তিনশো বছর শান্তির সময় পার করেছিল। এখানকার বাসিন্দারা তাদের সাফল্যে গর্ব বোধ করত; তারা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালী ছিল না বলে অবিরাম যুদ্ধ বিগ্রহ লেগে থাকা এক জগতে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করার জন্যে আলোচনার এক সুনিপূন কৌশল গড়ে তুলেছিল। আনুমানিক ১০০০ খৃস্ট পূর্বাব্দের দিকে ইসরাযেলের রাজা সোলোমমানের সঙ্গে সম্পাদিত এক মৈত্রীর অধীনে এর নৌবহরগুলো আধুনিকায়ন ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ পায়। সেই থেকে ফিনিশিয়ার সমৃদ্ধি আর থেমে থাকেনি। এখানকার নাবিকেরা স্পেইন আর অ্যাটলান্টিক সাগরের মতো দুরবর্তী এলাকায় গেছে। এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি তবে উত্তরপুর্ব এবং দক্ষিণ ব্রাযিলে তারা লিপি রেখে গেছে বলে অনুমান করা হয়। এরা কাঁচ, সিডার, অস্ত্রশস্ত্র, ইস্পাত আর আইভোরি নিয়ে গেছে। সিদন, টায়ার আর বিবলসের মতো বড় শহরগুলোর বাসিন্দারা সংখ্যা, জোতির্বিজ্ঞানের হিসাবনিকাশ, মদ প্রস্তুত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল এবং প্রায় দুশো বছর ধরে লেখার জন্যে বর্ণমালা ব্যবহার করে আসছিল, গ্রিকরা যাকে অ্যালফাবেট বালে জানত। খৃস্টপূর্ব ৮৭০ সালের শুরুর দিকে সুদুর নিনেভে নামে এক জায়গায় এক যুদ্ধ সভা মিলিত হয়েছিল। ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার দেশগুলো অধিকার করে নেওয়ার লক্ষ্যে অসিরিয় জেনারেলদের একটা দল সেনাবাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রথম আক্রমণ চালানোর জন্যে বেছে নেওয়া হয়েছিল ফিনিশিয়াকে। খৃস্টপূর্ব ৮৭০ সালের শুরুতে ইসরায়েলের গিলিদের এক আস্তাবলে গা ঢাকা দিয়ে আছেন দুজন লোক, আগামী কয়েক ঘণ্টার ভেতরেই মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন তারা।
ব্রাজিলিয়ান ঔপন্যাসিক পাওলো কোয়েলহো ডি’সুজা ১৯৪৭ সালের ২৪ আগস্ট দেশটির রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে জন্মগ্রহণ করেন। একই শহরে তার শিক্ষাজীবনের শুরু এবং বেড়ে ওঠা। আইন বিষয়ে কিছুদিন পড়াশোনার পর ভ্রমণের নেশায় তা আর শেষ করতে পারেননি। ঐ সময়টা ভবঘুরের ন্যায় ঘুরে বেড়িয়েছেন মেক্সিকো, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, চিলিসহ ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে। এর পরপরই ছোটবেলার স্বপ্ন বই লেখাকে বাস্তবে রূপ দেন। ১৯৮২ সালে ‘হেল আর্কাইভস’ নামক বই দ্বারা সাহিত্য অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তবে এই প্রবেশ আকর্ষণীয় ছিলো না। এমনকি দ্বিতীয় প্রকাশিত বই ‘প্রাক্টিক্যাল ম্যানুয়েল অব ভ্যাম্পায়ারিজম’ তার নিজেরই অপছন্দের তালিকায় ছিলো। ১৯৮৭ সালে ‘পিলগ্রিমেজ’ এর পর ১৯৮৮ সালে প্রকাশ পায় তার আরেক বই ‘দ্য আলকেমিস্ট’। পাওলো কোয়েলহো এর বই হিসেবে ‘দ্য আলকেমিস্ট’ বইটিই মূলত কোয়েলহোর লেখক-জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তবে ‘৮৭ সালে বইটি প্রকাশিত হয়েছিলো ব্রাজিলের একটি ছোট প্রকাশনা সংস্থা থেকে, যারা ন’শোর বেশি কপি ছাপাতে নারাজ ছিলো। ১৯৯৩ সালে একই বই আমেরিকার বিখ্যাত প্রকাশনী হারপার কলিন্স থেকে প্রকাশিত হলে পাঠক মহলে হুলুস্থুল পড়ে যায়। বইটি এখন পর্যন্ত মোট ৮০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, যা পাওলো কোয়েলহো এর বই সমূহ এর মাঝে অনন্য। কোয়েলহোর কাহিনীগুলোর বিশেষত্ব হলো তার কল্পনাশক্তির জাদুকরী মোহ। কোনো সরল গল্প দ্বারা তিনি গভীর জীবন দর্শনবোধ পাঠকদের মাঝে সঞ্চালন করতে চান, এবং সফলতার সাথে করেও এসেছেন। পাওলো কোয়েলহো এর বই সমগ্র-তে স্থান পাওয়া উপন্যাসগুলোর মাঝে ‘দ্য আলকেমিস্ট’, ‘ব্রিদা’, ‘দ্য ডেভিল এন্ড মিস প্রাইম’, ‘দ্য জহির’, ‘দ্য ভ্যালকাইরিস’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ‘দ্য মাডি রোড’, ‘দ্য রং গিফট’, ‘দ্য জায়ান্ট ট্রি’, ‘দ্য ফিশ হু সেভড মাই লাইফ’, ‘আই উড র্যাদার বি ইন হেল’, ‘রিবিল্ডিং দ্য ওয়ার্ল্ড’ এর মতো ছোটগল্পগুলোতেও দর্শনের প্রমাণ মেলে, যা পাঠকদের গভীরভাবে ভাবতে শেখায়। পাওলো কোয়েলহোর আরেক পরিচয় তিনি গীতিকার। বেশ কিছু জনপ্রিয় ব্রাজিলীয় গানের জনক তিনি।