হযরত শাহ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি সেই মহান ব্যক্তি যিনি সারা জীবন ভারতে ইসলামের খেদমত করেছেন এবং তার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ভারতবর্ষে ইসলামের প্রচার করেছেন ইসলামের প্রচার-প্রসারে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন। তিনি ওয়াজ-নসিহত, পীর-মুরিদীর পাশাপাশি লেখালেখির ক্ষেত্রেও অবদান রেখে ইসলামের পতাকাকে সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক তিনি সাহসিকতার সাথে কাজ করেছেন। তাঁর ‘ফতোয়ায়ে আযীয’, পবিত্র কুরআনের তাফসীর ‘ফহহুল আল-আযীয’ এবং ‘তোহফায়ে ইসনা আশারিয়া’ এর শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। আলোচ্য খেতাবটি একটি গবেষণামূলক কেতাব যা ‘হাসনাইনে করিম’ তথা হযরত ইমাম হাসান (রা.) ও হযরত ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের উপরে লেখা হয়েছে। এতে তিনি হযরত হাসনাইনে কারীমাইনের ফজিলত, মর্যাদা, তাঁদের শাহাদাতে রহস্য, ইতিহাস এবং তাঁদের হত্যার সাথে জড়িতদের পরিণতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করেছেন। কেতাবটি সংক্ষেপে লেখা হলেও এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। তিনি এই কিতাবটির “সিররুল আল-শাহাদাতাইন” নামকরণ করে তাঁর নামের সাথে বাস্তবতার একটি সত্যিকারের চিত্র তুলে ধরে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য গবেষণার কর্তৃত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তার এই গবেষণা থেকে যেসব আহলে বাইতের বিদ্বেষীরা পবিত্র আহলে বাইতের প্রতি ক্ষুব্ধ এবং কখনো কখনো বিদ্রুপ করে আহলে বায়াতের মহব্বতকে ‘শিয়াবাদ’ বলে অভিহিত করে এবং অভিশপ্ত ইয়াজিদকে মহাবীর বানানো এবং ইমাম হোসেন (রা.)-কে রাষ্ট্রদ্রোহী বানানোর দুঃসাহস করে অভিশপ্ত ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়াকে ‘রামাতুল্লাহি আলায়হি’ এবং ‘রাদি আল্লাহু আনহু’-এর যোগ্য মনে করে ও ব্যবহার করা সাহস করে, তাদের দাবিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চায় -এ কেতাবটি পড়লে আশা করি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে। এই কিতাবে তিনি যেমন ভাবে তার নিজস্ব লেখাশৈলির মাধ্যমে হাদিস থেকে ব্যাখ্যামূলকভাবে বাস্তবতা উপস্থাপন করেছেন তা সত্যি অতুলনীয়। কেতাবটির গুরুত্ব অনুধাবন করে এ কিতাবের অনুবাদ করা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ এর দ্বারা উপকৃত হয়। হযরত শাহ্ সাহেবের এই প্রয়াসকে আরো সুন্দর করার জন্য ‘তাখরিজ’ করে দেওয়া হয়েছে। এ বইটিতে তাখরিজ করে দেওয়া রেফারেন্সের সংখ্যা প্রায় ৪০০ এবং সেগুলি প্রায় ৮৭টি বই থেকে নেওয়া হয়েছে। অধিকন্তু, হযরত শাহ্ সাহেব কিতাবের শিরনাম স্থাপন করেননি; বরং তিনি এটিকে একটি ছন্দে অবিচ্ছিন্নভাবে লিখেছেন, তাই সাধারণ পাঠকের সুবিধাথে এর জন্য বিভিন্ন শিরোনাম স্থাপন করা হয়েছে যাতে প্রাসঙ্গিক বিষয়বস্তুতে পৌঁছানো সহজ হয়। আল্লাহতালা তাঁর দরাজাত বুলন্দ করে দিন। আমাদেরকে তাঁর ফয়ুজ ও বরকত নসীব করুন। -আমিন