অণুগল্প একরৈখিক। ডালপালাহীনকাণ্ড। অণুগল্প একটি ঢেউ; হতে পারে ছোট বা বড়; কিন্তু একটি। একটি ঠসকেই এর উৎপত্তি এবং বিনাশ। দপ করে জ্বলে উঠে ঝলসে দিয়ে দপ করে নিতে যাবে আবার। অণুগল্প পাঠ করে পাঠক বিহ্বল হবে। চমকে যাবে। ধাক্কা খাবে। রক্তক্ষরণ হবে। অণুগল্প হচ্ছে অনুভূতির পুকুরে ঢিল ছোঁড়ার মত। পুকুরে ঢিল ছোঁড়ার সাথে সাথে প্রখম যে ছোট্ট বৃত্তটি তৈরি হয় তা হলো-অণুগল্প। তারপর বৃত্তের বাইরে একের পর এক বড় বৃত্ত তৈরি হয়। যা পাঠকের মন অণুগল্পের ভেতরের গল্পগুলো নিয়ে নিজের মধ্যে ভাবনার বড় বড় বৃত্ত সৃষ্টি করে। অণুগল্প হলো অন্ধকার রাতের আকাশ চিরে নেমে আসা এক ঝলক বিদ্যুৎ যা চকিতে আলো ফেলে চেতনাকে উদ্ভাসিত করেই ডুব মারে কিন্তু রেখে যায় হৃদয়ে গভীর এক দাগ, বারবার মনে হয়-আহা, কি হেরিলাম! অণুগল্প হলো বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো। কয়েকটি বাক্যের মধ্যে দিয়ে অনেক বড়ো একটা চিন্তা ভাবনা প্রকাশ করার অবকাশ থাকে। অণুগল্প হলো ছোটগল্পের নবজাতক শিশু। আধো আধো কথা বলে অথবা সামান্য কিছু শব্দ উচ্চারণ করে মাকে জানাবে তার খিদে-ঘুম পাওয়ার কথা। মা সেটা বুঝে নেবেন অবলীলাক্রমে। অণুগল্প একটা স্ফুলিঙ্গ যেন। যেন ধারালো তরবারি এক। ছিটকে বেরিয়ে এলো। চোখে এসে লাগলো তার ভেজ। অথবা বিদ্যুৎ চমক যেন। এই এলো এই নেই। কিন্তু তার আলোকিত তরঙ্গের একটা রেশ যেন সে রেখে গেল। অণুগল্পকার পাঠকের হাত ধরে ছুটতে ছুটতে একটা চৌরাস্তার মোড়ে এনে ছেড়ে দেবেন তার হাত। পাঠকের দায়, সে খুঁজে নেবে নিজের পছন্দ মতো পথ চৌরাস্তায় এসে। পাঠক, আমার অনুগল্পের রাজ্যে আপনাকে স্বাগতম।