আলহামদুলিল্লাহ। রক্তরোগ তত্ত্বের দ্বিতীয় খ-ে রক্তের ক্যান্সারগুলোর সর্বাধিক প্রচলিত তিনটি প্রকার নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রধান তিন প্রকারের প্রতিটিই আলাদা আর তাই অনেক বিষয়ই তিনটির বর্ণনা করতে গিয়ে একাধিকবার উল্লেখ করেছি। এটা ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনুসন্ধান ও জানার চেষ্টা যদিও অনেক সীমাবদ্ধতাই ছিলো এতে আর আছেও। ব্যক্তিগত অধ্যয়নের নোটগুলো বছরের বিভিন্ন সময় লেখা ও সাজানো তাই অনেক বিষয় ও শব্দের ব্যবহার বার বার করতে হয়েছে, আমি সেগুলোকে বই আকারে প্রকাশের সময় উঠিয়ে নেয়া সমীচিন মনে করিনি, যেমন ‘ঝুঁকির উপাদান” এর উল্লেখ, কিছু ইংরেজি মেডিকেল শব্দ আছে যেগুলোর বাংলা প্রতিশব্দ ব্যবহার করিনি কারণ এগুলোর ইংরেজি পদ ও বানান দুটোই আমার জানার প্রয়োজন ছিলো। হিপ্রোক্রেটিস (চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক) নানা রোগের বিভিন্ন মৌলিক তত্ত্বের উপর জোর দিতেন। রোগের আদি মৌলিক তত্ত্ব জানার জন্য ইংরেজি উল্লেখের কোনো অভাব নেই। আমার প্রয়োজন বাংলা ভাষায় এ বিষয়ক একটি বই। যতোগুলো দশক রক্তের ক্যান্সার আবিষ্কার ও জানার অগ্রগতিতে কেটেছে ততোদিনে প্রকাশিত পুস্তকের সংখ্যা নিতান্ত কম নয়। কিন্তু রক্তের ক্যান্সারগুলো পড়তে গেলে একটি সর্বাত্মক তথ্য সম্বলিত বাংলা ভাষায় রচিত বই আমার কাছে সুলভ ছিলো না, তাই অপটু হাতে এ কাজে মনোনিবেশ করি। এই বইটি অবশ্যই সর্বাত্মক নয় তবে অপ্রচলিত কিছু বিষয় এতে প্রাক ক্যান্সার আলোচনায় সংযুক্ত আছে। যেগুলো ক্যান্সার বুঝতে সহায়ক হয়েছে আমার জন্য। একই বিষয় বা ঘটনা নিয়ে সত্য উপস্থাপনায় বিভিন্ন জনের লেখায় বিভিন্নতা থাকবেই আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চিকিৎসা কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে ব্যক্তিগত নোটগুলোকে বই আকারে প্রকাশ করতে উদ্যোগী হই। কিছু সংযোজন বিয়োজন ও সমন্বয় সহ রক্তের ক্যান্সার চিকিৎসায় সব ক্ষেত্রেই চিকিৎসা বিকল্পগুলো অভিন্ন। কিন্তু তা আমরা কিভাবে জানবো, যদিও একই রকম চিকিৎসার কথা বার বার উল্লেখ আছে, সেটা এজন্যই যে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অনুসৃত চিকিৎসা বিকল্পের বাস্তবতা কি, তা তুলে ধরা। পরীক্ষণগুলোর কথাও বারবার উল্লেখ আছে। অনেক বিষয়বস্তুর বাস্তবতা সামনে এসেছে সেগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা আজ অবধি চলমান। রোগের নামগুলো বেশির ভাগই ইংরেজিতে ব্যবহার করেছি কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া। সর্বাধিক তথ্য ও বিষয় সংযোজন, একটি গবেষণাধর্মী দৃষ্টিভঙ্গী ও অনুসন্ধান, অবিকৃত বিষয় ও তথ্য উপস্থাপনের উপর জোর দেয়ার চেষ্টা করেছি। জানিনা এই চেষ্টা কোথায় পৌঁছেছে? ক্যান্সারের অতীত ও বর্তমান, চলমান গবেষণায় উন্নয়নের দশকগুলোয় অর্জন, রক্তের ক্যান্সারগুলোর বিভিন্নতা এগুলোর উৎপত্তিস্থল, রোগের সার্বিক বাস্তবতা, চলমান প্রচলিত চিকিৎসায় আশা ও ব্যর্থতাগুলোর গাঁথা এবং ভবিষ্যতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন চিকিৎসা বিকল্পগুলোর অনুসন্ধান বুঝতে এই বইটি সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।