মিষ্টি কে না ভালোবাসে! কিন্তু মিষ্টিকে ভালোবাসা সহজ কম্মো নয়। কারণ, তাহলে জানতে হয় মিষ্টির ইতিহাস-ভূগোল। তাড়ুকে যে ভালোবাসায় আপন করে নেন মোদক, একই ভালোবাসা নিয়ে কলম না ধরলে মিষ্টির ইতিহাস মধুর হয় না। সুব্রত রুজ সেই বিরল মানুষ, এই সন্ধি যাঁর আয়ত্তে। তিনি যেমন ভীম নাগ মশায়ের উত্তরসূরি, তেমনই রসিকজন। সেই সঙ্গে ইতিহাস-ভূগোলেও সমান মনোযোগী। তাই বাংলার মিষ্টির ইতিহাস সন্ধানে তিনি যে যোগ্যতম ব্যক্তি, সন্দেহ নেই। এ বইয়ে সুব্রতবাবু ডুব দিয়েছেন মিষ্টির টইটম্বুর ইতিহাসে। পরিবারসূত্রে জেনে আসা কাহিনিকে যাচাই করে নিয়েছেন সহজাত কৌতূহলে। জিভে দিলে যে মিষ্টি গলে যায়, তার নেপথ্য-শৈলীর সন্ধান করেছেন। মিষ্টির ভাগ, বিবর্তন এবং স্থান-কাল ভেদে মিষ্টির বদলে যাওয়া চরিত্রের ধারাবিবরণী ‘মিষ্টান্নমিতরে’। আর, এ সফরের আকর্ষণ হল এর খাঁটি ঘিয়ের মতো শুদ্ধতা। বইপড়া বিদ্যের বাহাদুরি নয়, লেখক যা চেখে দেখেছেন, তাই-ই লিখে রেখেছেন। এখানেই তিনি স্বতন্ত্র। সঙ্গে আছে তাঁর লেখার সরসতা। যে মজলিশি ঢঙে এ ইতিহাস তিনি ব্যাখ্যা করেন, তাতে তথ্য-তত্ত্বের ভার পাঠকের ঘাড়ে চেপে বসে না। বরং পাতা ওলটাবার পর যেন আঙুলে লেগে থাকে মিঠে আস্বাদ। হ্যাঁ, গুণী পাঠক মাত্রই জানেন, স্বাদু লেখার থেকে মিষ্টি আর কিছু নেই।