আর এস এসের কাছে হিটলার-মুসোলিনি নিঃসন্দেহে মহান নায়ক। হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী আর এস এস হিটলারের সর্বগ্রাসী পন্থাকে নির্লজ্জভাবে ও খোলাখুলি অনুসরণ করে যাবতীয় নাগরিক ও মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায় ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের। নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর, ভারতের গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থার সর্বনাশ করা এবং সংখ্যালঘুদের উপর আঘাত হানার প্রিয় পুরোনো খেলাকে ত্বরান্বিত করে তুলেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আর এস এস)। মহাত্মা গান্ধির হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার জন্য ১৯৪৮ সালে এই চরম সাম্প্রদায়িক সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার জন্য আবারও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সংগঠনটিকে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, যে আর এস এস মুসলমানদের কাছ থেকে দেশের প্রতি দ্বিধাহীন ও অবিচল আনুগত্য দাবি করছে, অথচ তাদের নিজেদেরই ভারতের সংবিধান বা জাতীয় পতাকার প্রতি কোনও আনুগত্য নেই। এই সংগঠন ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামের খোলাখুলি নিন্দা করেই ক্ষান্ত হয়নি, ভগৎ সিং আর তাঁর সাথীদের মতো মহান শহিদদের ব্যঙ্গও করেছে, যাঁরা মাতৃভূমির মুক্তির জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। আজ আর এস এস সম্বন্ধে খুঁটিয়ে ও গুরুত্ব দিয়ে জানা দরকার, কেননা এটি এখন আর কোনও প্রান্তিক সংগঠন নয়, কারণ বর্তমানের বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যেই আর এস এসের প্রতি তাঁদের সমর্থন ও আনুগত্যের কথা ঘোষণা করেছেন। ভারতের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে পরিস্থিতি কতটা সংকটজনক তা মোদির একটি বিবৃতি থেকেই বোঝা যায়, যেখানে নিজেকে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। মোদি যদি ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ হন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ‘মুসলিম জাতীয়তাবাদী’, ‘শিখ জাতীয়তাবাদী’, ‘খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদী’, ইত্যাদিও থাকবে, যা ভারতীয় জাতীয়তাবাদের পুরো ধারণাটাকেই ভেঙে চুরমার করে দেবে। উদার অর্থনীতির পাণ্ডাদের প্রতিনিধি হিসেবে আর এস এস দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা, বহুত্ববাদ, ইতিহাস, বিজ্ঞান ও সর্বোপরি সংস্কৃতির উপরে যে সর্বাত্মক ফ্যাসিস্তসুলভ আক্রমণ ক্রমাগত চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গ্রন্থটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে সমর্থ হবে।
গৌতম রায় (জুন ১৯৩৯) স্কুল পড়ুয়া অবস্থা থেকেই একটা নেশা ঢুকে গিয়েছিল মাথার মধ্যে, নাটক দেখা। স্টার, রঙ্গমহল, শ্রীরঙ্গম (বিশ্বরূপা), মিনার্ভা প্রায় গোগ্রাসে গেলা। মাথার মধ্যে নাটুকে পোকাটা তখন থেকেই বিজবিজ করত। সেই আর্কষণ থেকেই নাটকে অভিনয় করা। স্কুল জীবন শেষ করার আগে থেকেই অভিনয় শুরু। কিন্তু আর এক নেশা, ছবি আঁকা। সেই টানেই ইন্টারমিডিয়েটের পর আর্ট কলেজ। কলেজ জীবন শেষ করেই নেমে পড়তে হল বাণিজ্যিক শিল্পে। রোজগারের ব্যবস্থায়। এটা সেটার পর পাকাপাকি ভাবে প্রচ্ছদ শিল্পের জগতে। ১৯৬২ থেকে ২০১২। এখনও প্রচ্ছদ আকাঁ চলছে। সহস্রাধিক প্রচ্ছদের রূপকার। তুলি ছাড়াও কলম চলতে শুরু করে নাট্য রচনা দিয়ে। শুধু নাটক রচনা নয় সঙ্গে চলে গল্প, উপন্যাস, মাঝে মাঝে কবিতাও। সামাজিক গল্প উপন্যাস ছাড়াও তাঁর বিশেষ ন্যাক ছিল রহস্যধর্মী কাহিনি রচনায়। সামাজিক গল্প উপন্যাসের চেয়েও এক সময় তিনি গোয়েন্দা গল্প আর উপন্যাস নিয়ে নিয়মিত লেখা শুরু করেন। এতাবৎকাল তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা পঁচাত্তরেরও বেশি।