বাউল ফকির কথা বইয়ের ফ্ল্যাপে লিখা কথা ‘বাউল ফকির কথা’ রূপের আড়ালে অরূপরতন সন্ধানের এক উজ্জ্বল উপাখ্যান। এই বইয়ের প্রতিপদ্যা আজকের বাংলায় বাউল-ফকিরদের প্রকৃতি অবস্থান ও সাংসারিক অবস্থা, তাঁদের জীবনের ছন্দ, বাণী আর সুরের উৎস সন্ধান। সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো যাবতীয় জ্ঞাতব্য সারণি, বিস্তৃত তথ্যপঞ্জি ও ফকিরদের আত্মকথন- সেইসঙ্গে সংগৃহীত বাউল ও ফকিরি গান, স্বরলিপি ও আলোকচিত্র সম্ভারে অপররূপ এই রচনা ও তার প্রকাশগত শৈলী । বাংলা সংস্কৃতির নির্মাণে বহু বিচিত্র গৌণ ধর্মাচারীদের কাহিনি ও তাঁদের নারীজীবনের বর্ণবিভায় উদভাসিত অন্তরমহল মরমি লেখনীতে ব্যক্ত হয়েছে। বাউল-ফকিরদের দেহতত্ত্বের রহস্যময় আয়নার বিচ্ছুরণ এ বইকে স্বাদু ও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। আবু তাহের ফকিরের লেখা ‘ফকিরি-নামা’ এবং লোকসংগীত বিশেষজ্ঞ দিনেন্দ্র চৌধুরীর সঙ্গে লেখকের আলাপচারি উল্লেখ্য সংযোজনে সমৃদ্ধ।
বিষয়সূচি আত্মপক্ষ ১ সূর্য আর শিশির-২১ আয়নামহলের কথা-৩৩ গোপ্য সাধনার ত্রিবেণী-৬৩ দেহের দেহলী-১০৮ সাধনসঙ্গিনীর রহস্যলোক-১৫০ ফানা থেকে বাকা-১৭১ ফকিরদের সঙ্গে দ্বিরালাপ-২১৬ ফকিরের আত্মকথা-২৩০ পুরুলিয়ার ‘সাধু’ গান-২৫৩
২ জেলাওয়ারি বাউল পরিচিতি-২৫৯ ফকিরদের পঞ্জি-২৭৯ আউল গানের নানবর্গ-২৮২ বাংলা ফকিরি গানের স্বর্ণসঞ্চয়-২৯৫ বাউল-ফকিরি গানের স্বরলিপি ও স্বরলিপি প্রসঙ্গে-৩২২ বাউল-ফকিরি গানের সুর প্রসঙ্গে আলাপচারি-৩৪৯ পশ্চিমবঙ্গের বাউল, ফকির ও গায়কদের আর্থ-সমাজিক পরিচয় সারণি-৩৫৫ নির্দেশিকা-৩৬১
জন্ম ১৯৩৪ সালে। জীবিকায় বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক। অবসর গ্রহণের পরে দু’বছর ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অতিথি অধ্যাপক এবং এখন অতিথি অধ্যাপক পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ও হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজের স্নাতকোত্তর বাংলা বিভাগে। বারো বছর ধরে সম্পাদনা করেছেন বার্ষিক সংকলন ‘ধ্রুবপদ’। গবেষণাকর্ম, মৌলিক রচনা ও সম্পাদনার কাজে খ্যাতিমান। ভালবাসেন গান আর গ্রাম। কৃষ্ণনগর আর কলকাতায় উভচর বাসিন্দা। রবীন্দ্রসংগীত, বাংলা গান, লোকধর্ম ও সমাজ নৃত্ত্ব, নিম্নবর্গের সংস্কৃতি, গ্রাম্য মেলা মহোৎসব, মৃৎশিল্প, চালচিত্রের চিত্রকলা, লালন ফকির প্রভৃতি নানা বিচিত্র বিষয়ে তাঁর প্রণিধানযোগ্য বই আছে। তা ছাড়া আছে আখ্যানধর্মী বেশ ক’টি সুখপাঠ্য বই। পেয়েছেন শিরোমণি পুরস্কার (১৯৯৩), আচার্য দিনেশচন্দ্র সেন পুরস্কার (১৯৯৫), নরসিংহদাস পুরস্কার (১৯৯৬) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরোজিনী বসু স্বর্ণপদক (২০০২) আর ‘বিশিষ্ট অধ্যাপক’ খেতাব (২০০৭)। ‘বাউল ফকির কথা’ বইয়ের জন্য পেয়েছেন ২০০২ সালের আনন্দ পুরস্কার এবং ২০০৪ সালের সর্বভারতীয় সাহিত্য অকাদেমি সম্মান।