ভ্রমণ সত্যিই তো এক জীবনী সুধা-এ কথা চীন ভ্রমণের গদ্য-শিল্পী খায়রুজ্জামান হীরার। খায়রুজ্জামান চেতনার দিক থেকে, মননশীলতার দিক থেকে আপদমস্তক একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। বলা যায় তিনি ভ্রমণশিল্পী, ভ্রমণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর ভ্রমণপ্রিয় কৃতিগ্রন্থসমূহ পাঠ করে এই ভ্রমণশিল্পীকে বুঝা যায় তাঁর ভিতরে আছে জগত দেখার নান্দনিক বাসনা। এি বাসনার ফল ও ফসল : চীন ভ্রমণের গদ্য। এই গদ্যটি বিনির্মাণ করতে গিয়ে লেখক কল্পনার আশ্রয় পরিত্যাগ করেছেন। তিনি গ্রহণ করেছন সরেজমিন পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। ভ্রমণের ক্ষয়ে যাওয়া স্মৃতিকে স্মৃতিপটে ধরে লিপিবদ্ধ করতে তিনি গ্রহণ করেছেন প্রযুক্তি। এটি লেখককের চমৎকার স্বীকার-উক্তি। এই গ্রন্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন, তার প্রান্তর কাঁপানো আগুন স্লোগান থেকে রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধ এবং যেমন চিত্রিত হয়েছে, তেমনই বর্ণিত হয়েছে চীনের পরাক্রান্ত হওয়ার দহন এবং এর থেকে পরিত্রাণপূর্বক উত্থান ও উন্নয়ন। পরিশেষে খায়রুজ্জামান হীরার স্বদেশপ্রেমজাত উচ্চারণ মননে মাও সেতুংয়ের উচ্চারণের মতোই ধ্বনিত হয় : বাংলার গ্রাম আমার মনে হয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নান্দনিক জনপদ...। কী চমৎকার স্বদেশপ্রেম আর সহজাত বোধ।