সারসংক্ষেপ : শির্কের অনেকগুলো মারাত্মক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। মহান আল্লাহ শির্কের গুনাহ ক্ষমা করেন না। অন্যান্য গুনাহ মহান আল্লাহ চাইলে ক্ষমা করে দেবেন। শির্ক সবচেয়ে বড়ো জুলুম। শির্ককারীর জন্য মহান আল্লাহ তাঁর জান্নাতকে নিষিদ্ধ করবেন। মহান আল্লাহর ইবাদাতে শির্ক করলে ঈমান ভঙ্গ হয়ে যায়। ইবাদাত কবুলের শর্তই হলো, শির্কমুক্ত পরিপূর্ণ ইখলাস। যদি মহান আল্লাহর ইবাদাতে শির্ক থাকে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তা কবুল করেন না। শির্ক করলে সব আমল বিনষ্ট হয়ে যায়। শির্ক দুধরনের হয়ে থাকে। শির্কে আকবার, যেমন- মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট দু‘আ করা, বিপদে-আপদে সাহায্য চাওয়া, জবেহ করা, সিজদা করা, মান্নত করা, রুকু‘ করা প্রভৃতি। এ ধরনের শির্ককারীর পরিণতি হলো- এ ব্যক্তি কাফির ও মুশরিক হয়ে যায়। তাদের জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যায় এবং স্থায়ীভাবে জাহান্নামী হয়ে যায়। তার সমস্ত আমল বিনষ্ট হয়ে যায়, তার রক্ত ও সম্পদ হালাল হয়ে যায়। শির্কে আসগার, যেমন- মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে শপথ করা; এভাবে বলা যে, “যদি আল্লাহ ও আপনি না থাকতেন” “আল্লাহ ও আপনি যা চান”; মুসলিমদের রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদাত ইত্যাদি। কুরআন ও সুন্নায় এগুলোকে শির্ক হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে, কিন্তু এ ধরনের শির্ককারী ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় না। তবে কবীরা গুনাহ হবে। ঈমান ও আমলকে বিশুদ্ধ রাখতে হলে শির্ক সম্পর্কে জ্ঞানার্জন অত্যাবশ্যক। লুকমান ✈ তার সন্তানকে প্রথমে শির্ক সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। নবী-রাসূলদের দা‘ওয়াতের মূল বিষয় ছিল শির্ক সম্পর্কে সতর্কীকরণ। এ গ্রন্থে সংক্ষিপ্তভাবে সহজ ভাষায় শির্ক সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এ গ্রন্থটি শির্ক সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনে ভাইবোনদের সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ। উক্ত গ্রন্থটি ওয়াহীদিয়া ইসলামিয়া লাইব্রেরী থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। প্রকাশক গ্রন্থটিকে সুন্দরভাবে প্রকাশের জন্য অনেক সময় ও শ্রম ব্যয় করেছেন। মহান আল্লাহ তাকে, তার প্রকাশনীকে এবং তার প্রচেষ্টাকে কবুল করুন। বইটি রচনার ক্ষেত্রে নির্ভুল করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। তদুপরি, মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে। সম্মানিত পাঠকের নিকট কোনো ভুলত্রুটি পরিলক্ষিত হলে আমাদেরকে জানাবেন। পরবর্তীকালে সংশোধন করে নেব ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহ উক্ত বইটিকে কবুল করুন। আমাদের সবাইকে শির্কমুক্ত তাওহীদি ঈমান ও আমল গড়ার তাওফীক্ব দিন। আমীন!
ড. মোহাম্মদ ইমাম হোসাইন ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার কৈয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম নুর আহমাদ, মাতার নাম আনোয়ারা বেগম। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় মেধা তালিকায় যথাক্রমে একাদশতম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) ও এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান এবং মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে প্রথম স্থান অধিকার করে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। পরবর্তীতে একই বিভাগ হতে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। কামিল (হাদীস) পরীক্ষায়ও প্রথম শ্রেণীতে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের আরবী বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত। তিনি তাফসীরুল কুরআন, খুতবা, ওয়াজ মাহফিল, বিভিন্ন আলোচনা ও লেখনীর মাধ্যমে শির্কমুক্ত তাওহীদি ঈমান এবং বিদ‘আতমুক্ত সুন্নাতি আমলের দাওয়াতের কাজ করে থাকেন (www.tafseerulquran.com)। তাঁর লিখিত ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে এগারোটি গবেষণা প্রবন্ধ বিভিন্ন রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।