গ্রন্থকারের আত্মকাহিনী এবং পরিচিতিঃ নাম মুহাঃ আজহারুল ইসলাম। তিনি ১৯৩৭ সালে যশোর জেলার অন্তর্গত মনিরামপুর থানার অধীনে ঝাঁপা নামক গ্রামে এক আদর্শ মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতা একজন ধার্মিক লোক ছিলেন । আজহারুল কৈশোর কাল থেকেই নামাজ কালাম পড়তেন, এবং পাক-পবিত্র থাকতেন। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ হলে তাকে অদুরে নেঙ্গুড়াহাট মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেওয়া হয়। তিনি ১৯৫১ সালে দাখিল পরীক্ষা কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। পূনঃরায় আলিম প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। আজহারুল একজন নম্র-ভদ্র ও বিনয়ী ছাত্র ছিলেন। সবাই তাকে ভালবাসতেন এবং স্নেহের চোখে দেখতেন। এতে ক্লাসে লম্পট হিংসুটে ছাত্ররা জ্বলে পুড়ে মরতো। নানাভাবে তাকে নির্যাতন করতো। সকল বিপদ, বাধাসমুহের মধ্য দিয়ে ১৯৫৫ সালে তিনি আলিম পরীক্ষায় পাশ করেন। তথায় উচ্চ শিক্ষার কোন ব্যবস্থা না থাকায় অন্যত্রে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে লাউড়ি মাদ্রাসা থেকে ফাযিল পাশ করেন। সে যুগে আলেম লোক সমাজে খুবই কম ছিল। তখন ষোলখাদা মাধ্যমিক স্কুলে মৌলভীর পদ শুন্য থাকায় আজহারুল ইসলামকে তলব করলে তিনি বিনা দ্বিধায় ষোলখাদা মাধ্যমিক স্কুলে মৌলভী শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। তখন থেকে শুরু হলো তার কর্মজীবন। নিশ্চিন্তে তিনি নিজের পান্ডলিপি লিখে তার নামকরণ করেন "ক্ষমা"। এর পর “যৌতুক” , “বাসর ঘরের দুয়ারে” , “কলাবনের কালাচাঁদ” , “কালো মেয়ে” বই গুলো লিখে হাত ধুয়ে বসলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হলে প্রতিষ্ঠানটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিনত হচ্ছে। এহেন অবস্থায় তাকে ডাকা হলো নিজ গ্রামে নব প্রতিষ্ঠিত ঝাঁপা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার জন্য। বাধ্য হয়ে তিনি ১৯৭৫ সালে ঝাঁপা মাদ্রাসায় সিনিয়র শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। আজহারুল আরবী সাইডের শিক্ষক ছিলেন। চাকুরির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে ১৯৯৭ সালে তিনি সুসম্মানে অবসর গ্রহন করেন। অবসর থাকাকালীন সময়ে তিনি পূর্বের মত লেখা-লেখির কাজে লিপ্ত হলেন। “কালো মেয়ে” , “অবহেলিত কন্যা” , “পুতুল রানীর কুদ্দুস”, “ভাগ্যের নির্মম পরিহাস” ইত্যাদি বই তিনি লিখেছেন। তবে "ক্ষমা" বইটি গ্রন্থকারের একান্ত আত্মকাহিনী।