আমাদের দেশে অনেকরকম গ্রন্থ প্রকাশ হয়। গল্পগ্রন্থ, কবিতাগ্রন্থ, উপন্যাস, ভ্রমণগ্রন্থ বা জীবনীগ্রন্থ। ওয়াহিদ সিদ্দিকী রচিত ‘সমুজ্জ্বল অতীত’ এর পাণ্ডুলিপি যখন হাতে পাই; মনোযোগ দিয়ে পুরো বইটা পড়ি। পড়তে পড়তে মনে হলোÑ এইসব প্রাঞ্জল লেখা মূলত কী? এ তো কবিতা নয়; গল্প নয়; জীবনঘনিষ্ঠ হলেও জীবনীগ্রন্থও নয়। তাহলে এসব কী? হঠাৎ মাথায় এলো- এসব হচ্ছে স্মৃতি! হ্যাঁ; ‘সমুজ্জ্বল অতীত’ একটি স্মৃতি-সংকলন। বোধকরি বাংলাভাষায় লিখিত এই গ্রন্থটিই প্রথম স্মৃতি-সংকলন। এই গ্রন্থে লেখক তাঁর সুদীর্ঘ কর্মজীবন ও যাপনকালের স্মৃতিসমূহ নিপুণ নিষ্ঠায় লিখে গেছেন। ছোট ছোট নানারকম স্মৃতির মধ্য দিয়ে লেখক একটা সার্বজনীন বার্তাও দিতে চেষ্টা করেছেন। সরলচোখে তাকালে মানুষের জীবন তো স্মৃতির সমষ্টিই। প্রতিটি মানুষ স্মৃতির কাছে নতজানু। যাপনের স্মৃতির সাথে সমসময়ের যোগসূত্র আবিস্কার করতে পারাই হচ্ছে লেখকের মুনশিয়ানা। যে কাজটা ওয়াহিদ সিদ্দিকী পরম দক্ষতা ও মমতার সাথে করেছেন। ব্যক্তিগত স্মৃতির পাশাপাশি, প্রাতিষ্ঠানিক স্মৃতি, দেশ ও বিদেশের নানারকম স্মৃতিও যুক্ত হয়েছে এই স্মৃতি-সংকলনে। এইসব স্মৃতিতে যেমন আছে নিজস্ব অনুভব; তেমনি আছে বৈশ্বিক দৃষ্টি ও মানবিকতার শিক্ষা। অর্থবহ এইসব স্মৃতি ধারণ করে আছে-- আমাদের সময়চিত্র ও সমাজচিত্র; শিক্ষামূলক উপাদান লেখাগুলোকে দিয়েছে ভিন্নএক আলোকিত মাত্রা। জীবন ও যাপনসন্ধানী পাঠকের কাছে এই গ্রন্থ এক অনন্য অনুভব হয়ে হাজির হবে-- এই আমার বিশ্বাস!