বিশ্বরাজনীতির পটভূমিতে ফিলিস্তিনের সমস্যা একটি জটিল এবং দীর্ঘস্থায়ী সংকট, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতির বহু দিককে প্রভাবিত করেছে। এই সমস্যার বাহ্যিক উৎপত্তি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে।ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং উদ্বেগজনক। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ ও অনৈতিক আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। গাজায় হামাসের শাসন এবং আগ্রাসন মোকাবিলার ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের সামরিক প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ফিলিস্তিনের চলমান সমস্যা আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন শক্তিশালী দেশ, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এবং আরব দেশগুলি নিজেদের স্বার্থ এবং কৌশল অনুযায়ী পরিস্থিতি পরিচালনা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সহায়তা, তহবিল এবং কূটনৈতিক চাপ ফিলিস্তিনের সংকট সমাধানে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকাই পালন করতে পারছে না।আলোচ্য বইটিতে শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকি উসমানি হাফিজাহুল্লাহ-এর মূল্যবান বক্তব্য এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের সমস্যার একটি জ্ঞানমূলক এবং হৃদয়গ্রাহী পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে। এতে ফিলিস্তিনের সংকটের পটভূমি, ইসরায়েলি হামলার বাস্তবতা, এবং মুসলিম উম্মাহর প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।এই বইটি ফিলিস্তিনের সংকটের প্রতি স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান এবং মুসলমানদের দায়িত্ব অনুধাবনে সহায়ক হবে বলে আশাবাদী। এটি শুধু একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ নয়, বরং একটি প্রেরণাদায়ক বার্তা, যা মুসলিম উম্মাহকে একত্রিত হওয়ার এবং আল্লাহর পথে চলার আহ্বান জানায়। পৃথিবীর ভবিষ্যতে আগমনী এ ধরনের সংকটের সুন্দর সমাধাম এ বই। সাথে সমৃদ্ধ ও সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পরিক্রমাও।
প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী শুধু ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে বই রচনা করেননি, তিনি একাধারে ইসলামি ফিকহ, হাদীস, তাসাউফ ও ইসলামি অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ। আর তা-ই নয়, তিনি একজন বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শরীয়াহ আদালতে, এমনকি পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের শরীয়াহ আপিল বেঞ্চেরও বিচারক পদে আসীন ছিলেন। মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে ১৯৪৩ সালের ৫ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তান দুটি আলাদা রাষ্ট্রে পরিণত হলে তার পরিবার পাকিস্তানে চলে আসে এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। শিক্ষাজীবনে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে ইসলামি নানা বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়েও শিক্ষা নিয়েছেন। তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, যেখান থেকে অর্থনীতি, আইনশাস্ত্র ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেন। আর পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেছেন আরবি ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ. ডিগ্রি। দারুল উলুম করাচি থেকে পিএইচডি সমমানের ডিগ্রি অর্জন করেছেন ইসলামি ফিকহ ও ফতোয়ার উপর। সর্বোচ্চ স্তরের দাওয়া হাদিসের শিক্ষাও তিনি একই প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করেন। বিচারকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও বিভিন্ন ইসলামি বিষয়, যেমন- ফিকহ, ইসলামি অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আন্তর্জাতিক ফিকহ একাডেমির স্থায়ী সদস্যপদ রয়েছে তাঁর। পাকিস্তানে 'মিজান ব্যাংক' নামক ইসলামি ব্যাংকিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পাকিস্তানে ইসলামি অর্থনীতির প্রসারে তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি রচনা করেছেন অসংখ্য বইও। তকী উসমানীর বই এর সংখ্যা ৬০ এর অধিক। শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী এর বই সমূহ রচিত হয়েছে ইংরেজি, আরবি ও উর্দু ভাষায়। শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তকী উসমানী এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'Easy Good Deeds', 'Spiritual Discourses', 'What is Christianity?', 'Radiant Prayers' ইত্যাদি ইংরেজি বই, ও 'তাবসেরে', 'দুনিয়া মেরে আগে', 'আসান নেকিয়া' ইত্যাদি উর্দু বই উল্লেখযোগ্য। এসকল বই ইসলাম প্রসারে, এবং বিভিন্ন ইসলামি ব্যাখ্যা প্রদান ও আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।