রাত প্রায় দেড়টা। ড্রেস চেঞ্জ করার পর, ফ্রিজ খুলে সে হাফ পেগ হুইসকি নিল। সাথে চিপস। গ্লাসে দুটো বরফ কুচি ছেড়ে দিল। জীবনে আজ প্রথম সে মদ খাবে। মদ খাওয়া দেখার অভিজ্ঞতা একশ ছাড়িয়েছে, কিন্তু খাবার অভিজ্ঞতা আজই প্রথম। হুইসকির সাথে একটা সিগারেট ধরিয়ে নিল। ফয়সাল তার বন্ধুদের এভাবেই খেতে দেখেছে। আজ সে অভিজ্ঞতাটাই কাজে লাগল। সে বারান্দায় এসে দাঁড়াল। আজও চাঁদটা ঝলমল করছে। ফয়সাল গতরাতের দৃশ্যটা মনে করে ঘটনা বোঝার চেষ্টা করছে। ঘটনাটা বাস্তব ছিল না ইলিউশন? নাকি হ্যালুসিনেশন! সেটাই সে বুঝতে চাইছে। তবে ঘটনা কিছু একটা আছে, এটা সে বুঝতে পেরেছে। গতরাতের কথা মনে হলেই কেমন জানি লাগে। কাল রাতে সে দেখেছে একটা কুকুর হঠাৎ করেই শালবাগানের নিচে পড়ে গেল। এরপর সে মাটিতে ছটফট করতে লাগল। মুহূর্তের মধ্যেই কুকুরটার শরীরের মাংসগুলো কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল। সে কিছুই বুঝে উঠবার আগে ভীষণ ভয়ে তার হাত-পা কাঁপা শুরু করল। ফয়সাল কারণটা বুঝতে পেরেছে। গতরাতে কুকুরটার সাথে কী হয়েছিল। হুইসকির একটা পেগ শেষ করে সে দ্বিতীয় পেগ হাতে নিয়ে যখন ভাবছে, ঠিক তখনি সে দেখতে পেল তার ড্রিংসের গ্লাসের সাথেও একটা শামুক ঝুলছে। চিৎকার দিয়ে ঘরে ঢুকতে গিয়ে ফয়সাল মেঝেতে পিছলে পড়ল। তার ঘরের সাদা মেঝে একবারে কালো কুচকুচে, নরম, থলথলে লক্ষ লক্ষ শামুকে ভরে গেছে। শামুকগুলো তার গা বেয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। প্রচণ্ড ভয়ে সে গোঙানির মতো শব্দ করছে। তার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। শামুকগুলো খুব দ্রুতই ফয়সালের শরীরকে শীতের কম্বলের মতো ঢেকে ফেলল। ফয়সাল শুধু ভাবছে এ থেকে মুক্তির উপায় কী? হোটেল অমরুত পার্ক ল্যান্ডে বিশ বছর আগেও কি এমন ঘটনা ঘটেছিল? ফয়সালের শরীরে লক্ষ লক্ষ শামুক একসাথে ধারালো দাঁত দিয়ে কামড়াতে লাগল!