শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন ‘চোখ ফিল্ম সোসাইটি’র সকল কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাময় দিনগুলো আমার কাছে কখন যেন সিনেমাময় শৈল্পিক হয়ে উঠেছিল। ক্লাসরুমের নিয়মিত ক্লাসের বাইরে ক্যান্টিনে, প্রেসক্লাবে কখনো বা লাইব্রেরি বিল্ডিংয়ের সামনে চলত আমাদের সিনেপাঠ, প্রকাশনার কাজ কিংবা চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের রূপরেখা ইত্যাদি। রাত জেগে দেশ-বিদেশের সিনেমা দেখা নেশার মতো হয়ে যায়। একসময় বুঝতে পারি, সিনেমা শুধু দেখার বিষয় নয়, তা পাঠেরও বিষয়। আমাদের সিনেমা দেখার চোখ বদলে যেতে থাকে, যে চোখ কেবলই সিনেমার ভাষা কিংবা নির্মাণশৈলী খুঁজতে চায়। সিনেমা পাঠে কিংবা কর্মশালার মাধ্যমে নিজেকে ভবিষ্যতের একজন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে কল্পনা করতে ভালো লাগত! বিশ্ববিদ্যালয়জীবন শেষে পেশাগত জীবনে প্রবেশের পর সঙ্গত কারণেই সেই স্বপ্ন চাপা পড়ে যায়। তারপর কেটে যায় অনেকটা দিন কিন্তু সিনেমা দেখার নেশা আমায় ছাড়ে না। সাথে চলতে থাকে সিনেমা বিষয়ক বিভিন্ন বই পাঠ। সিনেমা দেখতে দেখতে কখন জানি ভালোলাগার সিনেমাগুলো নিয়ে লেখার তাগিদ জন্ম নেয়। আমি কিভাবে সিনেমা দেখার মাধ্যমে এর ভাষা কিংবা এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অথবা রূপক খুঁজে নিয়েছি- তা নিয়েই এই বই। তাই এ বইয়ের নাম ‘যে চোখে সিনেমা দেখি’। লিখতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবনাকে শাণিত করার জন্য সাহায্য নিয়েছি বিভিন্ন চলচ্চিত্র পরিচালক ও সমালোচকদের লেখা বইয়ের, যার নাম প্রতিটি লেখার শেষে যুক্ত করা হয়েছে। এ বইতে প্রকাশিত প্রবন্ধ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিন ও দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় সিনেমা সংক্রান্ত প্রবন্ধের পাশাপাশি বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটক নিয়ে একটি লেখাও সংযুক্ত করা হল। প্রথম বই হিসেবে অনেক ভুল-ত্রুটি রয়ে যাবার সম্ভাবনা প্রবল যার জন্য সম্মানিত পাঠকদের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি একান্তভাবে কাম্য। চলচ্চিত্র সম্পর্কিত ছবিগুলো অন্তর্জাল থেকে নেয়া হয়েছে।