মনোচিকিৎসকঃ তো... কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি? আমিঃ জানি না। আমি...কি যেন শব্দটা? হতাশ? আরো কি খোলাশা করতে হবে ব্যাপারটা? বেএক সে-হি যখন মনোচিকিৎসকের দ্বারস্থ হয় তখন একটি প্রকাশনীতে সে একজন সফল সোশ্যাল মিডিয়া ডিরেক্টর। কি যেন নাম তার রোগের? হতাশা? সে একইসাথে বিষণ্ন, চিন্তিত, স্ববিরোধী, আবার অন্যের ব্যাপারে প্রচন্ড খুঁতখুঁতে। অফিসে ও বন্ধুদের সামনে শান্ত স্বভাবের মুখোশটি ভালোই ধরে রাখতে পারে। তবে এই মুখোশ পরে থাকাটাও ভীষণ ক্লান্তিকর ও দুঃসহ। এর জন্যই হয়তো কোনোদিন কোনো গভীর সম্পর্কে জড়াতে পারেনি। এটা তো কোনোভাবেই স্বাভাবিক হতে পারে না, তাই না? কিন্তু সে যদি এতই হতাশ হয়ে থাকে, তাহলে তার পছন্দের স্ট্রিট ফুডের জন্য জিভে জল আসে কি করে—আহা! ঝাল-ঝাল, গরমাগরম ত্তোকবোকি! এই-ই কি জীবন? ১২ সপ্তাহ ধরে মনোচিকিৎসকের সাথে যত কথোপকথন হয়েছে সব লিখে রেখেছে সে-হি। তারপর সেগুলোর নিজস্ব চুলচেরা বিশ্লেষণ বের করে নিজের প্রতিচ্ছবিকেই অসংখ্যবার কাঁটাছেঁড়া করে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়েছে। আস্তে আস্তে নিজের মনের জট ছাড়িয়েছে, বদঅভ্যাস ও ক্ষতিকর স্বভাবগুলোকে বিবেকের সামনে দাঁড় করিয়েছে-যেগুলো এতদিন তাকে এক আত্মবিধ্বংসী চক্রে ঘুরপাক খাইয়েছে। আধা আত্মজীবনী, আধা আত্মোন্নয়নমূলক হাংগুল বা কোরিয়ান ভাষার বই “চুকগু শিবজি-মান ত্তোকবোকি-নেন মকগোশিপ্পো” হতাশা ও বিষণ্নতার পাকেচক্রে যারা নিজেদের হারিয়ে ফেলছেন প্রতিনিয়ত, তাদের জন্য এক চিলতে আশার আলো এই বইটি। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততায় কখনো যদি নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে হয়, তবে এই বইটি আপনার সঙ্গী হিসেবে বেছে নিন।
বেএক সে-হি এর জন্ম ১৯৯০ সালে, দক্ষিণ কোরিয়াতে। ভার্সিটিতে ক্রিয়েটিভ রাইটিং নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে পাঁচ বছর একটি প্রকাশনীতে কাজ করেন। দশ বছর ডিসথাইমিয়ার (পারসিস্টেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার বা ক্রমাগত মৃদু হতাশা) জন্য মানসিক চিকিৎসা নিয়েছেন, যেটা পরে তার রচনার বিষয়বস্তু হয়, তারপর 'আই ওয়ান্ট টু ডাই বাট আই ওয়ান্ট টু ইট ত্তোকবোকি' নামে দুটো বইয়ে প্রকাশ পায়। তার সবচেয়ে পছন্দের খাবার ত্তোকবোকি, এবং তিনি তার রেস্কিউ করা কুকুর জারামের সাথে বাস করেন।