বই পরিচিতি : কবি জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) তাঁর স্বল্পদৈর্ঘ্য জীবনে নানা সংকটের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সদা নিরত থেকেও অন্যূন দুই হাজার কবিতা লিখেছিলেন। জীবদ্দশায় তাঁর প্রকাশিত কবিতার সংখ্যা মাত্র ২৬৯। প্রকাশিত ছয়টি কাব্যে সংকলিত কবিতার সংখ্যা ১৬২। তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় রূপসী বাংলা (প্রকাশকাল ১৯৫৭) ও বেলা অবেলা কালবেলা (১৯৬১)। কৃষ্ণাদশমী জীবনানন্দ দাশ কর্তৃক পরিকল্পিত একটি কাব্যগ্রন্থ। ১৯৪৮-এর ১৭ ফেব্রুয়ারি রোজনামচা তথা লেখার খাতায় তিনি এই বইটির পরিকল্পনা লিখেছিলেন। তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশিত সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ সাতটি তারার তিমির ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হয়ে যাবার পর তিনি এই কাব্যগ্রন্থটির কথা ভেবেছিলেন। কবির পরিকল্পনা অনুসরণপূর্বক এ গ্রন্থটির পাণ্ডুলিপি তৈরি করা হয়েছে। এতে কবিতার সংখ্যা ৩৯। কৃষ্ণাদশমী'র কবিতাগুলি জীবনানন্দ এমন এক সময়ে লিখেছিলেন যখন তাঁর বীশ্ববীক্ষায় মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। বিমূর্ত হতে শুরু করেছে কাব্যভাষা। অর্থনির্মলতা হ্রাস পেয়ে কবিতা হয়ে উঠেছে রহস্যময়। কবিতার মধ্যে আশ্রয় পেয়েছে প্রচ্ছন্ন ব্যঙ্গ ও সংগুপ্ত ক্রোধ। প্রগাঢ় হতাশা থেকে তিনি ব্যক্ত করেছেন: 'সুর তান লয় গান আছে পৃথিবীতে জানি, তবু গানের হৃদয় নেই।'
জন্ম: ৩ জুন, ১৯৫৯, বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ ও সাহিত্যিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও, তিনি অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা ও অপারেশানস্ও বিজনেস রিসার্চ ইত্যাদি বিষয়ের অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৮১ স্নাতক ও ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯৭ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে অধ্যয়ন করেছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি কিছু সময়ের জন্য পাবলিক পলিসি অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচ) যোগ দেন। অতঃপর সরকারের কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও আংকটাডের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিনি কূটনৈতিক পদে বেলজিয়াম, সুইজারল্যাণ্ড ও লুক্সেমবুর্গ এ দায়িত্ব পাল করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় কার্যরত রয়েছেন। সাহিত্য গবেষণা তাঁর প্রিয় ক্ষেত্র। তিনি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ও অন্যান্য রচনা নিয়ে প্রায় তিন দশক যাবৎ গবেষণা করে চলেছেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি জীবনানন্দ দাশের স্বহস্তে লিখিত পাণ্ডুলিপির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের সঠিক পাঠ নিরূপণ করেছেন। বিশেষ করে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের বর্জিত অংশ পুনরূদ্ধার করেছেন ও সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত শব্দাবলী বর্জন করে বিশুদ্ধ পাঠ তৈরী করেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা প্রতিবেদন ‘চটি সাহিত্যের পূর্ব পশ্চিম’। বর্তমানে তিনি বাংলা সাহিত্যের অভিধানে অসংকলিত শব্দ নিয়ে গবেষণা করছেন।