‘শাহনূর চৌধুরী’ এক অবিস্মরণীয় নাম, এক কিংবদন্তিও বটে। একটা জীবনের প্রায় দুই দশক কাটিয়ে দিয়েছেন মানুষের সেবায়, মানুষের কল্যাণে। চব্বিশ ঘণ্টার একদিনের একটা মুহূর্তও অলস কাটানো তাঁর স্বভাবে কখনো ছিল না। লেগে থেকেছেন এবং সময়কে নিজের করে নিয়েছেন। ভালো ছাত্র ছিলেন, পড়ালেখা করেছেন। পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি দেওয়ান আবদুর রহিম হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন। একই স্কুলে শিক্ষকতাও করেন। নিজের স্বপ্নকে ছড়িয়ে —ছিটিয়ে দিতে কাজ করেছেন নিরলস। পরবর্তীতে সময়ের প্রয়োজনে মধ্যবিত্তের চিরায়ত জীবনসংগ্রাম তাকে ব্রিটেন প্রবাসী ব্রিটিশ বানালেও শেকড় থেকে নিজেকে কখনো আলাদা করতে পারেননি। সময়—সুযোগে বারে বারে ফিরে এসেছেন নিজ মাটির টানে। তিনি দেশের বাইরে থেকেও দেশকে আরও বেশি ভালোবেসেছেন। পাশাপাশি সারাবিশ্বের মানুষের কল্যাণে যখন যেখানে যে—সুযোগ এসেছে কাজ করেছেন। এমন উদার মানুষরাই সমাজ ও সমাজের বৈষম্য বদলে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অবদান রেখে উদাহরণ সৃষ্টি করেন। আমাদের সবার প্রিয় এই মহান সমাজকর্মী ও শিক্ষানুরাগী জনাব শাহনূর চৌধুরীর কর্মময় জীবনের কিছু স্মৃতি ও শুভানুধ্যায়ীদের মূল্যায়ন নিয়ে এই স্মারকগ্রন্থ ‘আলোর সারথি’। মূলত শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অতি সামান্য কিছু কর্মকাণ্ড স্থান পেয়েছে এই স্মারকে। তার প্রবর্তিত ‘মেধা বৃত্তি’ একদশকের ও বেশি সময় পার করছে। প্রতিযোগিতামূলক বৃত্তি যে—শিক্ষার্থীদের কেবল মেধা যাচাই করে তা—ই নয় বরং প্রতিযোগিদের মধ্যে একটি সৃজনশীল সুস্থ মানসিকতা তৈরি করে যা তাদের ভবিষ্যতকে আরও শানিত করে। আর সে বৃত্তি যদি হয় শহরের বাইরে কোনো পল্লী এলাকায় তাহলে তার আবেদন বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে ভবিষ্যতে শহুরে শিক্ষার্থীদের চেয়ে স্বাভাবিকভাবে পিছিয়েপড়া গ্রামীণ ছাত্রদের প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে দেয়। আর সৃজন কাজটি দিনের পর দিন করে যাচ্ছেন শাহনূর চৌধুরী। এত দীর্ঘ সময় ধরে এ ধরনের একটি মেধাভিত্তিক চর্চা নিঃসন্দেহে সমাজের প্রতি একজন সমাজসেবীর সর্বোচ্চ দায়বদ্ধতাকে স্বীকৃতি দেয়। জনাব শাহনূর চৌধুরী আপাদমস্তক একজন সমাজহিতৈষী। তিনি একজন সৃষ্টিশীল ও আধুনিক মনস্ক মানুষ। প্রবাসে শত ব্যস্ততা অতিক্রম করে স্বজাতির উন্নয়নে তার রয়েছে গভীর ও কার্যকর চিন্তা। আর তার এ সকল ইতিবাচক চিন্তাকে তিনি মানুষের কল্যাণে অনুবাদ করতে সক্ষম হয়েছেন। আবার তার এ মানবসেবাকে তিনি দেশে শিকড় পর্যন্ত টেনে আনতে সমর্থ হয়েছেন। মধ্যবিত্ত শ্রেণির একজন যোগ্য প্রতিনিধি হিসাবে আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁছেছেন জনাব শাহনূর চৌধুরী। পরিশেষে আমি জনাব শাহনূর চৌধুরীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। ইতিবাচক চিন্তার আলোকিত এ বাতিঘর আমাদের মাঝে দীর্ঘদিন বহমান থাকুক। আলোকিত করুক সমাজ—সংসার। তিনি স্কটল্যান্ডের কমিউনিটিতেও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি ক্রেগমিলার কমিউনিটি কাউন্সিল অ্যাডিনবরার একজন নির্বাচিত কমিউনিটি কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ক্যাটারিং অ্যাসোসিয়েশন স্কটল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এবং সেখানে বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে দীর্ঘদিন জড়িত। তিনি গত প্রায় ২৯ বছর যাবত লেবার পার্টির সক্রিয় সদস্য।