মহান আল্লাহর ইচ্ছায় দুনিয়াতে কিছু দিনের জন্য সংসার পরিচালনার মাধ্যমে নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ বিষয়ে কতটুকু পালনীয় বিষয় পুরণ করেছি, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হতে হবে সকলকে। একজন নারীর উচিৎ হবে, স্বামীর প্রতিটি আদেশ নিজ দায়িত্বের মাধ্যমে পালন করা ৷ যে নারী তার স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখতে পারবে তার জন্য জান্নাতে যাওয়া অতি সহজ। বিশেষ করে সংসার জীবনে নারীদের ভেতর স্বামীর প্রতি কিছু বিরুপ মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। যেমন- স্বামীর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে তার গীবত করা, স্বামীর কোনো কথাকে তেমন গুরুত্ব না দেওয়া, স্বামীর সম্মুখে নিজের সাজগোজে গুরুত্ব না দেওয়া, স্বামী স্ত্রীর প্রতি রাগান্নিত হলে স্ত্রীর চড়াও হওয়া, নারীর কন্ঠস্বর উচ্চ শব্দে প্ৰকাশ পাওয়া ইত্যাদি । আসলে একজন স্ত্রী স্বামীর মন জয় করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। যাতে উভয়ের মধ্যে দাম্পত্য জীবনের প্রভাব বজায় থাকে। সুখে দুঃখে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলে নিজেদের মধ্যে আত্নীক ভালবাসা সৃষ্টি হতে পারে। একজন স্ত্রীর কাছে একজন স্বামী সব সময় চায়, সে আমাকেই ভালবাসুক। একজন স্ত্রী হিসেবে আপনারও কর্তব্য হবে, স্বামীকে সর্বোচ্চ ভালবাসার অধিকার দেওয়া । নিজের জীবনের আনন্দময় মুহুর্ত যদি স্বামীকে দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তাহলে দাম্পত্য জীবন শুধু সুখময় হবে না বরং উভয়ে একে অপরকে ছাড়া কোন কিছুই চিন্তা করতে পারবেন না। ঘরের যাবতীয় কাজে একজন স্ত্রী সবসময় পরিপাটি থাকলে আপনার শশুড়-শাশুড়ীসহ অন্যান্য আত্নীয়-স্বজন সন্তুষ্ট হবেন এবং গর্ববোধ করবেন আপনার জন্য। আপনার কথা-বার্তা, আচার-আচরণ, চলন- বলনের দ্বারা সবাই আপনার বিষয়ে পজেটিভ বা নেগেটিভ ধারণা পোষণ করবেন। নিজের কাজকে কখনও বোঝা মনে করবেন না। আপনার স্বামী বাহিরের কাজ কর্ম শেষে বাসায় আসে বিশ্রামের জন্য। যখন আপনি আপনার স্বামীকে স্বস্তি দিতে সমর্থ হন, তখন সে আপনাকে অভিভাদন জানায়। নিজেদের ভেতর এক রোমান্টিক সম্পর্ক বিরাজ করে; একে অপরের প্রতি তাকিয়ে নিজেদের দোষগুলো ভূলে একে অপরকে সমবেদনা জানান। তখন যেন সত্যিকার অর্থে জান্নাতের সুবাতাস নিজেদের ভেতর প্রবহমান হয়। একে অপরকে কিছু সময়ের জন্য না দেখলে কেমন যেন অনুভূতি সৃষ্টি হয়, মনের ভেতর ভাল না লাগা বিরাজ করে। স্বামীর সাথে কথা না বললে, সময়টা যেন বৃথা বৃথা মনে হয়। তার প্রতিক্ষায় আপনি বসে থাকেন, সে কখন আসবে । ঠিক তেমনি আপনার স্বামীও আপনার প্রতিক্ষায় থাকে, কখন অফিসের সময় শেষ হলে বাসায় ফিরব। আর এভাবেই নিজেদের আত্নীক সুখ তৈরী হয়, সৃষ্টি হয় ভালবাসার এক নতুন অধ্যায়। যে সম্পর্কের কখনও ফাটল ধরে না, কখনও মরিচাও ধরে না। যেন মনে হয়, এ সম্পর্ক ও ভালবাসা দুনিয়ায় এক টুকরো জান্নাত । অতএব, হে আমার বোনেরা! নিজের স্বামীকে ভালবাসুন এবং স্বামীকে কোনভাবেই কষ্ট দিবেন না । স্বামীকে সার্বিকভাবে সেবা-যত্নে কোন প্রকার ত্রুটি করবেন না । সুখে-দুঃখে একে অপরের সাথে মিলে মিশে থাকবেন । সকল কষ্ট বিসর্জন দিয়ে হলেও সংসার জীবনকে টিকিয়ে রাখবেন। স্বামীকে এমন কোন কথা বলবেন না, যাতে সে কষ্ট পায় ও ব্যথিত হয়। নিজেদের ভেতর সুসম্পর্কের মাধ্যমে অনেক কিছু করা যায়। পরষ্পরকে দোষারোপ না করে বরং ছাড় দিতে চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, আপনি যদি স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে পারেন তাহলে আপনার জান্নাত পাওয়া অতি সহজ। কেননা জান্নাত তো আপনার হাতের নাগালেই রয়েছে। আর সেটি হল আপনার স্বামীর সন্তুষ্টি। আপনার স্বামী সন্তুষ্ট তো আল্লাহ সন্তুষ্ট। আর স্বামী অসন্তুষ্ট তো আল্লাহ অসন্তুষ্ট। আল্লাহ আমাদের সকলকে দ্বীন জেনে ও বুঝে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন!