বাংলা ভাষার বর্ণগুলোর ভূগোল-ইতিহাস আছে। শব্দের আছে রস ও রহস্য। আর যদি হয় পৌরাণিক শব্দ, তা হলে তো কথাই নেই। পৌরাণিক শব্দে আছে দুরূহ ইশারা, আছে দুর্গম মানবহৃদয়ের সুলুকসন্ধান। পৌরাণিক শব্দে জড়িয়ে আছে সমকালের ভ‚প্রকৃতি, ক‚ট রাজনীতি-সমাজনীতির অনুষঙ্গ। পৌরাণিক শব্দ অতীতের বৃত্তান্ত যেমন শোনায়, তেমনি বর্তমানকে ধারণ করে থাকে। অতীত আর বর্তমানকে ভিত্তি করে ভবিষ্যতের বার্তা ঘোষণা করে পৌরাণিক শব্দসম্ভার। পৌরাণিক শব্দরহস্য উন্মোচন করা গভীর এক সাধনার ব্যাপার। এই সাধনায় মগ্ন হয়েছেন জ্যোতির্ময় সেন। বাংলাদেশে যে কয়জন শাস্ত্র-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত নিয়ে গবেষণা করছেন, তাঁদের মধ্যে তাঁর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গ্রন্থে পৌরাণিক শব্দগুলোর জটিল রহস্যময়তা স্বচ্ছ-সরল হয়ে উঠেছে। আপাত জটিল পৌরাণিক শব্দের মধ্যে কী অপরূপ কৌতুক-কৌত‚হল বর্তমান, তা তিনি আমাদের সামনে খোলাসা করার সক্ষমতা দেখিয়েছেন। ‘পৌরাণিক শব্দসন্ধান’ গ্রন্থে গবেষক প্রায় তিন হাজার পুরাণনির্ভর শব্দের রূপ-গূঢ়ার্থ কখনো গম্ভীর ভঙ্গিতে, কখনো কাহিনির ঢঙে উপস্থাপন করেছেন। গ্রন্থটিতে গবেষকের শ্রম-ঘামের নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। এই গ্রন্থটি পাঠকের তৃপ্তির ভান্ডার হবে নিঃসন্দেহে।