"অভিভাবকত্ব ও ভরণপোষণ"বইটির শেষের ফ্লাপের কিছু কথা: পারিবারিক জীবনে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আইনের আশ্রয় নিতে হয়। বিয়ে, দেনমােহর, তালাক, ভরণপােষণ, শিশুর অভিভাবকত্ব, উত্তরাধিকারীদের অংশবণ্টন, জমিজমার বিরােধসহ পারিবারিক অন্যান্য বিষয়ে সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগে থাকে। এ সব বিবাদের কিছু কিছু আদালতে সমাধান হয়। কিন্তু আদালতের মাধ্যমে সমাধান ব্যয়সাপেক্ষ ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় মানুষ এলাকার ক্ষমতাশীল নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে যায় সালিশের মাধ্যমে সমাধানের জন্য। অনেক সময় প্রচলিত আইনে যে বিধান আছে, সেসব না জানার কারণে এ রকম ধারণা জন্মায় যে, এ সমস্যা আইনের মাধ্যমে সমাধান করা যায় না। একইভাবে সালিশকাররাও আইন না জানার কারণে বিভিন্ন বেআইনি সমাধান দিয়ে থাকে। সালিশে বেত্রাঘাত, ফতােয়া, জরিমানা, দৈহিক শাস্তি প্রদান ইত্যাদি অহরহ ঘটে। ফলে মানুষ শুধু আইনি অধিকার থেকেই বঞ্চিত হয় না, তার মর্যাদা, মানবাধিকারও ভূলুণ্ঠিত হয়। বিগত বছরগুলােতে আইন সহায়তা ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা থেকে আইন ও সালিশ। কেন্দ্র (আসক)-এর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হয় যে, নারীরা শুধু নারী বলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে নানা রকম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এরপর কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম পারিবারিক আইন নিয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদান। এ প্রেক্ষিতে প্রশিক্ষণগুলােতে প্রচলিত আইনে। বিদ্যমান আইনি সুবিধাসহ যে বৈষম্যগুলাে রয়েছে, সে ব্যাপারেও অংশগ্রহণকারীদের অবগত করানাে হয়। পাশাপাশি ১৯৯৬ সাল থেকে আসক বিবাহ, তালাক, দেনমােহর, ভরণপােষণ ও অভিভাবকত্ব, মুসলিম উত্তরাধিকার আইন, হিন্দু পারিবারিক আইন, খ্রিস্টান পারিবারিক আইন, পারিবারিক আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশােধিত২০০৩), আইনে শিশু প্রসঙ্গ, সালিশ ও ফতােয়া এই ১২টি বিষয়ে আইনের কথা প্রকাশ করে আসছে। এ পুস্তিকামালায় আইনের তথ্য তুলে ধরাসহ প্রচলিত বিভিন্ন ভুল ধারণা দূর করার জন্য অত্যন্ত সহজ ভাষায় ছবির মাধ্যমে বিষয়গুলাে উপস্থাপন করা হয়েছে।