আব্দুর রহীম কোনো স্বনামধন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন না, ছিলেন নিতান্তই একজন সাধারণ মানুষ। কিন্তু তিনি ছিলেন আপন পরিবারের কাছে প্রিয় একজন অসাধারণ সানুষ। জীবিত অবস্থায় প্রিয়জন অসাধারণ হলেও তার কোনো গুণগান আনুষ্ঠানিকভাবে করা হয়ে ওঠে না। সেই মানুষটি যেন আলোবাতাসের মতই সহজভাবে পরিবারে বিরাজ করেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে যত দিন যায় তত তাঁর অসাধারণত্বের মহিমাও ফুটে উঠতে থাকে। আব্দুর রহীমের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিনি ছিলেন ‘প্লেইন লিভিং হাই থিংকিং’ মানুষের একজন উজ্জ্বল উদাহরণ। নিঃস্ব দরিদ্র অসহায় মানুষের জন্য তাঁর মমতা ছিল খাঁটি। স্রষ্টা ও সৃষ্ট জগৎ এবং মানুষের কর্তব্যকর্ম সম্বন্ধে তাঁর গভীর চিন্তাভাবনা ছিল। আধ্যাত্মিক চেতনা এবং সমাজচেতনার দিক থেকে তিনি একজন দার্শনিকের মতই ভাবতেন এবং নির্মোহ দৃষ্টিতে বিচার করতেন। তাঁকে বলা চলে একজন লোকায়ত দার্শনিক এবং একজন সহজ মানুষ। ঝর্না রহমান সম্পাদিত ‘সহজ মানুষ’ স্মরণগ্রন্থটিতে সেই মানুষটিকেই তুলে আনা হয়েছে আপনজনদের কলমে। পাশাপাশি এখানে রয়েছে তাঁর চিন্তাভাবনা ও আদর্শের কিছু পরিচয়। একটি পরিবার কীভাবে একজন মানুষের আদর্শ ও চিন্তাচেতনাকে ধারণ করে সুন্দর জীবন গড়তে পারে, ‘সহজ মানুষ’ বইটি তার উজ্জ্বল উদাহরণ। এ কারণে সাধারণ পাঠকের জন্যও এ বই গুরুত্ববহ।
চল্লিশ বছর ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত আছেন। ১৯৮০ সনে বাংলাদেশ পরিষদ আয়োজিত একুশে সাহিত্য প্রতিযোগিতায় ছোটগল্পে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে সাহিত্যক্ষেত্রে তাঁর আত্মপ্রকাশ। গল্প উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক, কবিতা, ভ্রমণ-শিশুসাহিত্য, সবক্ষেত্রেই তাঁর বিচরণ। গল্পকার হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৬০টি। পেশাগত জীবনে তিনি বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ রাইফেলস পাবলিক কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী। বাংলা ভাষার কথাসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০২১ সালে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪২৭ লাভ করেন। জন্ম ২৮ জুন, ১৯৫৯, গ্রামে বাড়ি : কেওয়ার, মুন্সিগঞ্জ।