নিশি ভীম আন্ধিয়ারী-এক অত্যাশ্চর্য কথামালা। এই আখ্যানের ভরকেন্দ্রে অবস্থান করছে যুবক রুশো, যার জীবন ও মনোজগতে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে আছে আদর্শিক মানুষ মামুন। মামুনের সংস্পর্শে এসে শিল্প-সাহিত্য, রাজনীতি এবং সমাজতত্তে¡র নানা দিগন্তে প্রবেশ করে সে। সময়ের গতিধারায় গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমায় রুশো। ঢাকায় এসে আরশির সাথে প্রণয়বদ্ধ হয়। ঘটনাক্রমে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় মামুন। মামুনের মৃত্যু রুশো আর আরশির সম্পর্কের প্রবাহকে রুদ্ধ করে দেয়। বুকে দীর্ঘশ্বাস চেপে গ্রামে ফিরে আসে রুশো। গ্রামে ফিরে মামুন হত্যার প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়! অপরদিকে, নিঃসঙ্গতার দুর্ভর বেদনায় ক্রমশ এক মায়া-মরীচিকায় জড়িয়ে পড়ে আরশি! শেষ পর্যন্ত আরশির আহ্বানে ঢাকায় ফিরে আসে রুশো। ঢাকায় ফিরলেও তাদের সেই প্রণয়-বন্ধন স্থায়ী হয় না। রুশোর জীবনে নেমে আসে সীমাহীন নিঃসঙ্গতা। নিঃসঙ্গতা মুক্তির অনিবার্য চেষ্টায় আপাত সাধারণ কিন্তু অসামান্য নারী নিশার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঘটনাচক্রে রুশো জানতে পারে, আরশি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। আরশির অসুস্থতা রুশোকে স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন ও বিযুক্ত করে দেয়। বহির্জাগতিক বাস্তবতার সঙ্গে অন্তর্গত সংঘাতের দ্বন্দ্ব,রুশোর জীবনে এক ট্র্যাজিক বেদনার জন্ম দেয়। অন্তর্গত সংঘাতের সাথে বহির্বাস্তবতাকে মেলাতে পারে না সে। ফলে দুই ক্ষেত্রেই ভীষণ অসঙ্গতির মুখোমুখি হয়। রুশো কি তার সেই বিষাদময় অতীতের সাথে অস্থির বর্তমানের সমঝোতা করতে পারবে? নিশি ভীম আন্ধিয়ারী সেই বিস্ময়কর প্রেম কাহিনী,যেখানে মানব-মানবীর সম্পর্কের উষ্ণতা ও বিচ্ছেদ,তাদের আত্মদহনের যন্ত্রণা,নিঃসঙ্গতার দুর্ভর বেদনা এবং মুক্তির আকুল আকাক্সক্ষা অঙ্গীভূত হয়ে মিশে আছে।