দু’হাজার পনেরোতে যাত্রা শুরু অনুকথার। ছোটো কিন্তু গভীরে স্ফুলিঙ্গ ছড়ানো জীবনকথার তীর ছোঁড়া এক একটি পূর্ণ অভিব্যক্তির বিপুল সমাবেশ পুরো বইটি। অপূর্ব চৌধুরীর ভাষায়, ‘গভীর চিন্তার আকর্ষণ কম; আকর্ষণীয় চিন্তার গভীরতা কম।’ মন, দর্শন এবং জীবনের সেøাগান নিয়ে লেখক তাই দৃঢ় প্রত্যয়ে বলেন, ‘ভালো বই জন্ম নেয়; জনপ্রিয় বইগুলো তৈরি করা হয়।’ মানুষ জন্মে এক টুকরো সাদা কাগজের মন নিয়ে। দিন বাড়ে, মনের কাগজে পড়ে সময়ের রং। কখনো ধূসর, কখনো রঙিন। ভারী হতে থাকে জীবন পাতার সঞ্চয়। কালে কালে বোধের পোতাশ্রয়ে ঘর বাঁধে অভিজ্ঞতার শেকড়। জন্ম নেয় জীবন দর্শন। লেখক তার নাম দেয় অনুকথা। জীবনের এই দর্শন জীবনকে ভাবায়, জীবনকে ভালোবাসায়, জীবনের পথে পথে হেঁটে হেঁটে দেখায় এক জীবনের অন্তরালে বহুধা জীবনের বন্ধন। ২০১৫ থেকে ২০১৮, ধারাবাহিকভাবে চারটি খণ্ড প্রকাশের পর লেখকের স্বভাবসুলভ বিচিত্র খেয়াল বৈচিত্র্যময় লেখায় জড়িয়ে যাওয়ায় অনুকথার পরবর্তী প্রকাশ থেমে যায়। ততদিনে বইটি হয়ে ওঠে একটি সিরিজ। লেখক ছাড়তে চাইলেও অনুকথা লেখককে ছাড়ে না। পাঁচ বছর বিরতির পর অনুকথা (পঞ্চম খণ্ড) জীবনের গতিশীল দর্শনের মনস্তাত্ত্বিক উপলব্ধির এক অনন্য ধারাবাহিক সংযোজন হয়ে আবারও হাজির হয় পাঠকের ডেরায়। পৃষ্ঠার সংখ্যায় অনুকথা ডাউস নয়, কিন্তু বোধের পেল্লায় বিস্তৃত তার স্ফুটন। অনুকথার পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে বিশাল জীবনের এক বিচিত্র প্রকাশ। পড়তে পড়তে পাঠকের মন হয়ে উঠবে এক স্বচ্ছ আকাশ।
অপূর্ব চৌধুরী। চিকিৎসক, কথাসাহিত্যিক ও বিজ্ঞান লেখক। জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং ছাত্রজীবন বাংলাদেশে। উচ্চতর পড়াশোনা ইংল্যান্ডে। বর্তমানে বসবাস লন্ডনে। পেশায় চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী, বোধের চর্চায় লেখক। ভালোবাসেন মিনিমালিজম। দর্শন, মনস্তত্ত্ব , ইতিহাস, বিজ্ঞান এবং সাহিত্য প্রিয় বিষয়। ভালো লাগে ভ্রমণ এবং ক্যাম্পিং। সাঁতার, লন টেনিস প্রিয় স্পোর্টস। শখের ছবি তোলেন। পাখি, ফুল এবং প্রকৃতি পছন্দ করেন। অবসরের আনন্দ হাইকিং, ট্র্যাকিং, মাউন্টেনিয়ারিং। বাংলা এবং ইংরেজিতে পত্রিকা ও জার্নালে নিয়মিত লিখেন। এ যাবত ৯ টি গ্রন্থের প্রকাশ। উল্লেখযোগ্য বই- অনুকথা সিরিজ, জীবন গদ্য, খেয়ালি প্রহর, বৃত্ত, ভাইরাস ও শরীর এবং রোগ ও আরোগ্য ।