তিনি ১৯৪ হিজরি সালের ১৩ শাওয়াল রোজ শুক্রবার (৮১০ খ্রিস্টাব্দ) খোরাসানের বুখারা নামক (বর্তমানে উজবেকিস্তানের অংশ) স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তঁর বাবার নাম ইসমাইল। তাঁর দাদার নাম ইব্রাহিম। তাঁর দাদার সম্পর্কে খুব বেশি জানা না গেলেও তার বাবা ইসমাঈল তৎকালীন মুসলিম বিশ্বে একজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনিও একজন হাদিসবিদ ছিলেন। তিনি হাদিস শাস্ত্রবিদ আল্লামা হাম্মাদ ও হযরত ইমাম মালেকের শাগরিদ ছিলেন। এছাড়াও বিখ্যাত মনীষী আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারকের শাগরিদ ছিলেন বলে জানা যায়। সমসাময়িক যুগের অনেক বুজুর্গ আলেমের কাছ থেকে দ্বীনের জাহেরি এবং বাতেনি ইলম হাসিল করে সুযোগ্য আলেম ও বিজ্ঞ মুহাদ্দিস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ইমাম বুখারী শিক্ষা, জ্ঞান ও যোগ্যতা শুধু পিতার দিক থেকে পাননি; বরং মাতার দিক থেকেও অর্জন করেন। ইমাম বুখারীর মাতা ছিলেন বিদূষী ও মহীয়সী মহিলা। তাঁর সম্পর্কে একটি ঘটনা বর্ণিত রয়েছে। বাল্যকালে ইমাম বুখারী একবার একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন এবং এই রোগের প্রভাবে তার দুই চোখ প্রায় অন্ধ হয়ে যায়। তাঁর মা পুত্রের চোখের আলো পুনঃপ্রাপ্তির জন্য ব্যাকুল হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে থাকেন। এ পর্যায়ে এক রাত্রে স্বপ্নে তিনি হযরত ইব্রাহীমকে তার শিয়রে বসা অবস্থায় দেখতে পেলেন। হযরত ইব্রাহীম তাকে বলেন, তোমার প্রার্থনা আল্লাহ্ কবুল করেছেন। পরদিন সকালে তিনি ঘুম থেকে জেগে তার পুত্র ইমাম বুখারীকে দেখেন যে, তার চোখ ভাল হয়ে গিয়েছে। ইমাম বুখারী শৈশবেই বাবাকে হারান। এরপর মায়ের কাছে প্রতিপালিত হন। পিতা মারা যাওয়ার সময় প্রচুর ধনসম্পদ রেখে যান। ইমাম বুখারীর বাল্যকাল থেকেই শিক্ষা-দীক্ষার প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। প্রথমত তিনি কোরআন পাঠ শুরু করেন। মাত্র ৬ বছর বয়সে তিনি কুরআন মুখস্থ করেন। ১০ বছর বয়স থেকে তিনি হাদীস মুখস্থ করা শুরু করেন। ১৬ বছর বয়সেই তিনি "আবদুল্লাহ বিন মুবারক" ও "ওয়াকীর পান্ডুলিপিসমূহ" মুখস্থ করে ফেলেন।