মাহবুব ভাইয়ের হার্টে খুব ব্যথা। ডাক্তার বলছে, অপারেশন করতে হবে। কিন্তু মাহবুব ভাই কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। তাঁর ধারণা ব্যথাটা হার্টে নয় ব্যথাটা বাইরে তৈরি, লাগছে বুকে। আর এই ব্যথার উৎস নিতু। হার্টে ব্যথা দেওয়া ছাড়াও নিতু অন্য ঝামেলাও করছে খুব। ইদানীং নিতু সবসময়ই মাহবুব ভাইয়ের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুপচি মেরে বসে থাকে। যেমন সেদিন সকালে, তিনি দাঁত ব্রাশ করতে আয়নায় মুখ দেখলেন। ওমা... সব দাঁতের মধ্যে নিতু। দাঁত ধরে লটকে আছে। মাহবুব ভাই ব্রাশ করতে যান, নিতু ধাক্কা দিয়ে ব্রাশ সরিয়ে দেয়। মহামুশকিল। মাথা আঁচড়াতে গেলে চিরুনিতে নিতু। চিরুনি কিছুতেই চুল থেকে ছাড়ানো যায় না। চিরুনির নিতু শক্ত করে মাহবুব ভাইয়ের চুল টেনে ধরে রাখে। বাজার করতে গেলে বাজারের ব্যাগের ভেতরে নিতু। পকেটে হাত দিলে সেখানেও নিতু। ঘুমোতে গেলে বালিশেও নিতু। এমনকি মাহবুব ভাইয়ের বিশেষ জায়গায়ও তিনি নিতুকে দেখতে পান। এসবের মানে কি? প্যান্টের জিপ খুলতেই এখন তাঁর খুব ভয় লাগে, কখন না আবার নিতু বেরিয়ে আসে। হুহ! আজ সকালে তো তিনি তাঁর অফিসের বস শহিদুজ্জামান স্যারের গালে নিতুকে বসে থাকতে দেখলেন। নিতু সেখানে দিব্যি আরাম করে পান চিবুচ্ছে। মাহবুব ভাইয়ের দিকে তাঁকিয়ে চোখ কুঁচকে স্যারের নাকে পিকও ফেললো। মাহবুব ভাই চট করে নিতুকে চড় মেরে দিলেন, ব্যস। স্যারের গালে চড়! এখন চাকরি যায় যায় অবস্থা। মাহবুব ভাই মুখ কুঁচকে বললেন, নিতুরে তোকে আমি খেয়ে ফেলবোরে... যাস্ট ভর্তা করে চিবিয়ে খাবো। আমার স্যারের গালে বসে পান খাওয়া... বের করবো আমি।
এই একটা ব্যাপার লিখতে এলেই আমার মাথার ভেতর ফাঁকা হয়ে যায়। ব্যক্তিগত তথ্যগুলো কেন জানি মানুষকে জানাতে ইচ্ছে করে না। আরেকটু গুছিয়ে বললে, বলার সাহস পাই না। তবে আজ ঠিক করেছি নিজের কিছু কথা বলবোই। আচ্ছা, লিখা ভালো লাগার জন্য কি লেখকের পরিচয়টা আদৌ জরুরি? আমার মনে হয় না। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলি, এমন অসংখ্য লিখা আমার ভালো লাগার আছে, যাদের লেখককে আমি দেখিনি। হয়তোবা লেখকের ছবি বইয়ের পেছনে ছিলও। কিন্তু আমি দেখিনি। কারণ লিখার মাধুর্য আর গল্পের চরিত্র আমায় টেনেছে, লেখক নয় । ফেলুদা যখন পড়ি, আমি ভেবেছি ওটা তোপসেরই লিখা অন্য কারো নয়। সত্যজিৎ রায়ের পরিচিতির জন্য আমি কিন্তু একটুও ব্যাকুল হইনি। শার্লক হোমস যখন পড়ি, আমি স্যার আর্থার কোনান ডয়েলকে একদিনও চিনতে চাইনি। বরং বারবার আমার কল্পনায় শার্লক হোমস সামনে এসেছে। বারবার আমি লিখা আর গল্পের চরিত্রতে মুগ্ধ হয়েছি। একজন লেখকের জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া কি জানেন? তাঁর লিখার জন্য পাঠকের ভালোবাসা। সুতরাং তৃধা আনিকার ব্যক্তিগত জীবন আপাতত লুকানোই থাক। তার চেয়ে বরং তৃধা আনিকা তার গল্পে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র সেজে নিজের মনের কথাগুলো অনায়াসে বলে যাক । দেখা যাক না, কি হয়। পাঠক তার লিখাকে কেমন ভালোবাসে, দেখি!