আশির দশকে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী চলতে থাকা আন্দোলনের সময়ের মধ্যদিয়ে নিজের কৈশোর থেকে যেখানে উত্তরণের যাত্রা তাতে রয়েছে প্রেম, দ্রোহ এবং যাতনা। সেই সময়ের কবিতাগুলোতে তার স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায় যা-- ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শরীক হওয়া এই জেনারেশনের কিশোর ভাবনার সাথে একাত্ম হয়ে যায়। তাই কবির কলেজ পডুয়া ছেলের আন্দোলনে অংশ নেয়ার সময় কবি নিজের কিশোর বয়সকে খুঁজে পান এবং এতোদিন পর সমালোচনার ভয়কে জয় করে প্রকাশের নিরন্তর তাগিদ অনুভব করতে থাকেন। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের আন্দোলনে শহীদের জন্য লেখা কবিতা তাই ২০২৪ এর শহীদের জন্যও প্রাসঙ্গিক মনে হয়। জন্মগতভাবেই প্রতিটি মানুষের ভেতর একটি কবিত্ব ভাব থাকে, থাকে কাব্য চেতনা। কেউ তা প্রকাশ করতে পারে, কেউ পারে না। কবিরা বলে থাকেন-- আমি লিখি না, কে যেন আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নেন। এই যে কোথায় থেকে যেন লেখার ভাবের উদ্রেগ হয়, তা কবি নিজেও বোধ হয় টের পান না। কবির ভেতরে এক ধরনের বোধ জেগে উঠলেই কবিতার জন্ম হয়। পঙ্ক্তির পর পঙ্ক্তি সাজিয়ে কবিতার অবয়ব তৈরি করেন। কবি আল মাসুক তেমনি একজন কবি। যিনি তাঁর আঠার-ঊনিশ বছর বয়সের তারুণ্য-আবেগ-ভালোবাসা-ভালোলাগাকে ডায়েরির পাতায় পাতায় লিখে রেখেছিলেন। আজ তিন যুগেরও অধিককাল পরে মলাটবদ্ধ হয়ে বের হলো তাঁর প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘চেতনায় প্রাণস্পন্দন’। কবির নিজের ভেতরের লুকানো ভাবনাগুলো প্রকাশের লালিত ইচ্ছার প্রকাশ এই কবিতাগ্রন্থ। কবিতাগুলো প্রকৃত কবিতা হয়ে উঠেছে কি-না, তা পাঠক নির্ধারণ করবেন। তবে এই কবিতাগ্রন্থের মধ্য দিয়ে তাঁর লেখালেখির জগতে প্রবেশের একটা চেষ্টা বলে তিনি জানিয়েছেন। আশা করি পাঠকের কিছুটা হলেও ভালো লাগবে।