সুন্দরবনের বানভাসি গ্রামের স্কুল-শিক্ষক অমর্ত্যের কাছে হঠাৎ হঠাৎ চলে আসে দুরুদুরু নামের এক বালক। মানুষ মিথ্যা বলছে দেখলে তার বুক দূরদূর করে, বুকে ব্যথা হয়। এই পৃথিবীর কোনো এক কুয়াশাঘেরা দ্বীপে একটি গাছের পাতায় তার এ রোগের ওষুধ আছে, গাছটির নাম সাপগাছ। দেশ-গাঁয়ে তখন ভরা আষাঢ়, সাপগাছের একটি পাতা ঝরে পড়বে এ মাসেই। কিন্তু দুরুদুরু তাতে উদ্দ্বিগ্ন! কেননা সাতশো বছর আগে, সাপগাছের একটি পাতা মাটিতে পড়ার পর থেকেই মিথ্যা বলতে শুরু করে মানুষ। আবার যদি তেমন কিছু হয়, মানুষ আরও দোষ করবে, মিথ্যা বলবে আরও। তাই যে করেই হোক পাতাঝরা আটকাতেই হবে তাকে। কিন্তু সেই কবে সে দেখেছিল সাপগাছের দ্বীপ, মনে করতে পারে না, পথও গেছে ভুলে। তাহলে উপায়? সারি সারি পাহাড়ের খাঁজে পাখিগ্রামে, কোনো এক সুদূর কালে সাপগাছের পাতা ঝরে মাটি ছোঁয়ার আগেই, ঠোঁটে নিয়ে উড়েছিল পঞ্জীপেড়ের এক পাখি। সে পাতার বাতাস লেগে বনের পাখি, কীটপতঙ্গরা আজও কোনো মিথ্যা বলতে জানে না। পঞ্জীপেড়ের পাখির ভাষা দুরুদুরু বোঝে, তারাই তাকে নিয়ে যাবে সাপগাছের দ্বীপে। সুন্দরবনে সেদিন নদীর ওপর আকাশ কালো করে ভীষণ ঝড় উঠেছে! অমর্ত্যের হাত ছাড়িয়ে সেই ঝড়ের মধ্যে বেরিয়ে পড়ে দুরুদুরু। সাপগাছের পাতা ঝরা পারবে কি সে আটকাতে!